"হাজী মুহম্মদ মহসীন"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: যে হৃদয় দয়ার্দ্র, মহামানবিক... চলুন একটা ভালাে চোর আর ভালাে গৃহকর্তার গল্প শুনি। ঘুমুচ্ছেন গৃহকর্তা। এই সুযােগে ঘরে ঢুকলাে চোর। বাহ্, জিনিসপত্রের অভাব নেই। চোর তাে মহা খুশি। ভালাে মওকা পাওয়া গেল। শুরু করল বোঁচকা বাঁধা। কিন্তু এদিকে যে গৃহকর্তার ঘুমটাই গেল ভেঙে! চোর আর যায় কই! তাকে খপ করে ধরে ফেললেন গৃহকর্তা। ওমা, চোরটা দেখি লুটিয়ে পড়ল গৃহকর্তার পায়ে! ব্যাটা কাঁদছে হাউমাউ করে। গৃহকর্তার মনটাও গেল খারাপ হয়ে। কী করেন এখন! চোরটা বলল, পাঁচ দিন তার ছেলেমেয়েরা অনাহারে আছে। তাদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্যই নিজেকে চোর সাজতে হয়েছে। এমন করুণ কাহিনীতে গৃহকর্তার মন গলে পানি। বুঝলেন, লােকটা পেশাদার চোর নয়। তাই শাস্তি না দিয়ে কিছু জিনিসপত্র আর খাবার দিলেন চোরটিকে। আর বলে দিলেন কোনােদিন চুরি না করতে। এই গল্পের গৃহকর্তা আর কেউ নন, আমাদের হাজী মুহম্মদ মহসীন। গল্পটি লােকসমাজে আজো বেশ বহাল তবিয়তেই চালু আছে। আজকে দাতার কথা এলেই আসে মহসীনের নাম। আর আমরা নতুন কোনাে দাতাকে পরিচিত করি এ যুগের মহসীন’ বলে। সত্যিই তিনি ছিলেন দয়ার সাগর। তাঁর মানসিকতাও গড়ে উঠেছিল উজ্জ্বলতম আদর্শের আলােকে। আমরা এই মহানুভবের চিন্তা থেকেই তা বুঝতে পারি, জন্ম হলেই মৃত্যু অনিবার্য! এই জন্ম-মৃত্যুর সন্ধিস্থলে দাঁড়িয়ে মানুষ জীবের কল্যাণ কামনায় যদি আত্মােৎসর্গ না করে, তবে তার মানবজন্ম বৃথা! এই নশ্বর জীবন কতক্ষণ!! আমার মৃত্যু যদি আমার জীবনের ইতিহাস না লেখে, তবে এ-জন্মে সার্থকতা কি? দয়াময় আমায় বুদ্ধি দিয়েছেন, উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছেন, চিত্ত দিয়েছেন। আমি যদি এসবের সদ্ব্যবহার করি, তবে তার অমূল্য দানের যথার্থ অবমাননা করা হবে। আমি তার কাছে শুধু নয়, নিজের কাছেও অপরাধী হব।' এমন চিন্তা লালন করতে পেরেছিলেন বলেই ইতিহাস তার কথা বলে, আমরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হই। মহসীনের জন্ম হুগলিতে। তাঁর দানের বিষয় এলেই আসে বড় বােন মনুজানের কথা। তাঁদের মায়ের নাম জয়নব খানম। মনুজানের বাবা আগা মােতাহার, আর মহসীনের বাবা আগা মুহম্মদ ফয়জুল্লাহ। এই কাহিনী আবার আরেক গল্প। আগা মােতাহার একদিন মেয়েকে ডেকে বললেন, “তােমার গলায় একটি মাদুলি পরিয়ে দিয়ে গেলাম। এর অনেক
জন্ম : ১ অক্টোবর ১৯৬৩ জন্মস্থান : গ্রাম-ককবান্ধাল, ডাকঘর-সারুটিয়া। উপজেলা-কেশবপুর, জেলা-যশাের। পিতা : এরসাদ আলী খান মাতা : নূরজাহান বেগম পেশা : শিক্ষকতা, লেখা। প্রিয় : বই। গ্রন্থসংখ্যা : কবিতা, গবেষণা, জীবনী, শিশুতােষ। রচনা ও সম্পাদনাসহ ১৬ (ষােল)। 'পুরস্কার : ধীরাজ স্মৃতি পুরস্কার, বিবেকানন্দ পদক, দেশজমেলা সম্বর্ধনা, গ্রন্থ। প্রকাশনাত্তোর সম্মাননা, মাইকেল মধুসূদন সাহিত্য পদক ও সম্মাননা সংগঠন : মধুসূদন একাডেমী, পােয়েট। ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও জীবনানন্দ গ্রন্থাগার।