"কেন আমি ধর্ম বিশ্বাসী নই" বইটি সম্পর্কে কিছু কথাঃ আমাদের মাঝে মাঝে বলা হয়ে থাকে যে কেবল অন্ধ গোঁড়ামী সজিক সম্প্রদায়গুলােকে কার্যকর করে তুলতে পারে। আমি মনে করি যে এই বিষয়টি ইতিহাসের সম্পূর্ণ বিপরীত। কিন্তু যারা কেবল সফলতাকে জনসের মত পুজো করে তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে উক্ত কার্যকারিতাকে প্রশংসনীয় ভাবতে পারে। আমার দিক থেকে আমি মনে করি অনেক ক্ষতি করার থেকে অল্প কিছু ভালাে করাটা অনেক ভালাে। যে-জগৎকে আমি দেখতে ইচ্ছা করি সেই জগৎ হবে এমন যা অতীব ক্ষতিকারক সম্প্রদায়গত শত্রুতার থেকে মুক্ত এবং অনুভব করতে সক্ষম যে, সবার জন্য সুখ শত্রুতার মধ্যে দিয়ে নয়, সহযােগিতার মধ্যে দিয়েই নিঃসৃত হতে পারে। আমি এমন একটি জগৎ দেখতে চাই যেখানে শিক্ষার লক্ষ্য হল মানসিক স্বাধীনতা এবং তার লক্ষ্য কখনই ধর্মমতের কঠিন বর্মের মধ্যে বন্দী যুব জনতার মন নয় যা নিরপেক্ষ প্রমাণের বাণসমূহের হাত থেকে তাদের সারা জীবন ধরে রক্ষা করার জন্য হিসেবনিকেশ করে তৈরী। জগতের প্রয়ােজন মুক্ত মন ও মুক্ত হৃদয়ের এবং তা পুরােনাে বা নতুন কোন ধরণের গোঁড়া ব্যবস্থা নয় যার থেকে মুক্ত মন ও হৃদয়ের সৃষ্টি হতে পারে। বার্ট্রান্ড রাসেল কেন ধর্মে বিশ্বাসী নয় সেই সম্পর্কে আরো অনেক যৌক্তিক কারন সম্পর্কে বলা আছে বইটিতে। যা আমাদের অন্ধ বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে এবং সেখান থেকে বেড়িয়ে আসতে সহায়তা করবে।
Title
কেন আমি ধর্ম বিশ্বাসী নই (পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের বই)
(১৮ মে ১৮৭২ – ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০) ছিলেন একজন ব্রিটিশ দার্শনিক, যুক্তিবিদ, গণিতবিদ, ইতিহাসবেত্তা, সমাজকর্মী, অহিংসাবাদী, এবং সমাজ সমালোচক.যদিও তিনি ইংল্যান্ডেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন, তার জন্ম হয়েছিল ওয়েলস এ, এবং সেখানেই তিনি ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। রাসেল ১৯০০ সালের শুরুতে ব্রিটিশদের আদর্শবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তাকে বিশ্লেষণী দর্শনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিবেচনা করা হয়, এর অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতারা ছিলেন তার শিষ্য ভিটগেনস্টেইন এবং পূর্বসূরি ফ্রেগে এবং তাকে ২০ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম যুক্তিবিদদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাসেল এবং হোয়াইটহেড একত্রে প্রিন্কিপিয়া ম্যাথমেটিকা নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তারা গণিতকে যুক্তির ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। তার দার্শনিক নিবন্ধ "অন ডিনোটিং" দর্শনশাস্ত্রে মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। দুটো গ্রন্থই যুক্তি, গণিত, সেট তত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব এবং দর্শনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত যুদ্ধবিরোধী ব্যক্তিত্ব এবং জাতিসমূহের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাস করতেন। তিনি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী। রাসেল তার অহিংস মতবাদ প্রচারের জন্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জেলবন্দী হন, তিনি হিটলারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান, সোভিয়েত টোটালিটারিয়ানিজম এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের সমালোচনা করেন এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে ছিলেন সর্বদা সোচ্চার। রাসেল ১৯৫০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন, যা ছিল "তার বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ যেখানে তিনি মানবতার আদর্শ ও চিন্তার মুক্তিকে ওপরে তুলে ধরেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিরোধীর ভূমিকা নেন, ফলস্বরূপ তাঁকে ছ'মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। সেই সঙ্গে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে বরখাস্ত হন। ১৯৫০ সালে পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে আন্দোলন সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই কারণে ১৯৬১ সালে তাঁকে আবার কারাদনণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ১৯৭০ সালে বারট্রান্ড রাসেল মৃত্যুবরণ করেন।