ফ্ল্যাপে লিখা কথা পাকিস্তানের শৈল নিবাস মারি হিলস। একশো বছরেরও বেশি আগে ব্রিটিশ ঔপান্যাশিকেরা ভারতে কায়েমি আবাস গড়ার সম্ভাবনা নিয়ে নিজেদের পান সুবিধার জন্যে সেখানে স্থাপন করিছিলেন ‘ডায়ার এন্ড মিকিন’ সুরা উৎপাদন কোম্পানী। পাকিস্তান হবার পর এই কোম্পানীর মালিকানা হাত বদল হয় পার্সিং সম্প্রদায়ের বান্ডারা পরিবারের কাছে। বর্তমানে এই বিয়ার প্রস্তুত কারক কোম্পানির নাম ‘মারি ব্রুয়ারি’ , মালিক মিনু বান্ডারা। ‘মারি ব্রুয়ারিকে’ কেন্দ্র করে এই কাহিনী;তবে প্রধান উপজীব্য পাকিস্তানের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, আমেরিকান সাংবাদিক মাইকেল সালিভান-এর দৃষ্টিকোণ থেকে যার অবতারণা । পাকিস্তানের সাতানব্বই শতাংশ মুসলমান, যাদের জন্যে সুরাপান নিষিদ্ধ। তারাই বেশির ভাগ কর্মী । যাদের একজন শিরিন। পাকিস্তান আমলে মৌলবাদীদের হামলায় বান্ডারা পরিবারকে তিন বার এই কোম্পানি বন্ধ করে দিতে হয়। ধর্মান্ধদের কোপদৃষ্টি এড়ানোর জন্যে এখানের মেয়ে-কর্মীদের নিজেদের কর্মসংস্থানের কথা নিজেদের পরিবারের কাছে লুকিয়ে রাখতে হয়। তেমনি কর্মী শিরিনের সংকট ও পরিনিতি কাহিনীর যবনিকা টেনে আনে। কাহিনী বর্ণিত হয়েছে পাকিস্তানের একটি বিশেষ সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়ন শেষ করার আগে থেকেই দিলারা হাশেম লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস ‘ঘর মন জানালা বাংলাদেশে একটি অতি জনপ্রিয় উপন্যাস হিসেবে সুভাস দত্তর পরিচালনায় ও কবরীর প্রযােজনার ১৯৭৩ সালে বলাকা মন নামে চলচিত্র হয়ে প্রকাশিত হয় । সৈয়দ ওয়ালিউল্লার পর প্রথম বাঙালি সাহিত্যিক যিনি বিদেশে অবস্থানকালে ১৯৯৫ সালে উপন্যাসের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কারে ভূষিত হন। উত্তর আমেরিকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন। কল্লোল তাঁকে বঙ্গ সম্মেলনে ২০০২ সালে বিশেষ সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করে। গল্প সমগ্র, কাব্য সংকলন, উপন্যাস মিলিয়ে দিলারা হাশেমের গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। ২০১০ সালে উত্তর আমেরিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালুমনাই অ্যাসােসিয়েশন তাকে সাহিত্যেজীবনকালীন সাফল্যের জন্যে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে। বাংলাদেশে আরাে যে-গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কারগুলাে তিনি পেয়েছেন—তার মধ্যে আছে ‘অনন্যা’ সাহিত্য পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, সরােজিনী নাইড় স্বর্ণপদক। তার গল্প উপন্যাস নিয়ে বিটিভি, এন টিভি-তে বেশ কিছু নাটক সম্প্রচারিত হয়েছে।