"বিদআত হতে সাবধান"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: ১. মীলাদুন্নবী (ছাঃ)-এর অনুষ্ঠান। অতঃপর আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্ম উপলক্ষে মীলাদ অনুষ্ঠান করা, তাতে কিয়াম করা, রাসূলকে সালাম দেওয়া এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে সকল ব্যাপার সাধারণতঃ মীলাদ মাহফিলে করা হয়ে থাকে সে সম্পর্কে বহুবার প্রশ্ন এসেছে। এর জওয়াবে কেবল এতটুকুই বলা যেতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এবং অন্য কারু জন্ম উপলক্ষে কোনরূপ অনুষ্ঠান করা শরী'আতে জায়েয নয়। কেননা তা হ’ল শরী'আতের মধ্যে নবােদ্ভুত বিষয় সমূহের অন্যতম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে তা করেননি, তার খুলাফায়ে রাশেদীনও করেননি এবং রাসূলের অন্যান্য ছাহাবী ও তাবেঈগণও তা কখনােই করেননি। অথচ তারাই ছিলেন সুন্নাতে নববী সম্পর্কে দুনিয়ার সকল মানুষের চাইতে বেশী ওয়াকিফহাল, রাসূলের মহব্বতে সর্বাগ্রগণ্য এবং তাঁর সুন্নাত ও শরী'আতের একনিষ্ঠ অনুসারী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,যে ব্যক্তি আমাদের শরী'আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي، تمسكوا بها وعضوا عليها بالواجذ وإياكم ومحدثات الأمور فإن كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة - رواه أحمد وأبو داود والترمذي وابن ماجه -
বাংলাদেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী চিন্তাবিদ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। ১৯৪৮ সালের ১৫ জানুয়ারী সাতক্ষীরার বুলারাটি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাওলানা আহমাদ আলী বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একজন বিখ্যাত আহলে-হাদিস আলেম ছিলেন। তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সিনিয়র মাদরাসা থেকে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি দাখিল, আলিম ও ফাযিল এবং জামালপুর থেকে ১৯৬৯ সালে কামিল পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মাদরাসা বোর্ডে আলিম ও কামিল পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্ব দেখান যথাক্রমে ১৬তম ও ৫ম হয়ে। অতঃপর তিনি কলারোয়া সরকারি কলেজ থেকে আইএ এবং খুলনার সরকারি মজিদ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। পিএইচডি গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ অর্জন করলেও পরবর্তীতে আর যাননি। অতঃপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজে খন্ডকালীন লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। একই বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। এই বিভাগ থেকেই ২০১৬ সালে অবসর নেন। তিনি লেখালেখি করেন রাজনীতি, অর্থনীতি্ সাহিত্য, রাষ্ট্রনীতি, ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক ছাড়িয়েছে। তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ‘আহলে-হাদীস আন্দোলন-বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান আমীর। মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এর বই সমূহ মূলত ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়, আহলে-হাদীস আন্দোলন, নবী-রাসূলদের জীবনী, ইসলামি খেলাফতের প্রাচীন ও বর্তমান অবস্থার দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এই ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক পেশাগত কাজে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করেছেন। আরবি, ফার্সি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় তাঁর দক্ষতা রয়েছে। পাঠক সমাদৃত মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এর বই সমগ্র হলো ‘আহলে হাদীস আন্দোলন কী ও কেন’, ‘জীবন দর্শন’, ‘ইনসানে কামেল’, ’ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), ‘তিনটি মতবাদ’ ইত্যাদি। ২০০০ সালে সৌদি সরকারের রাজকীয় মেহমান হিসেবে হজব্রত পালন করেন তিনি।