"তাফসীর কি মিথ্যা হতে পারে? " বইয়ের ভূমিকাঃ বর্তমানে কোন কোন বক্তার বক্তৃতার অনেক অংশই কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ তারা তদন্ত ছাড়াই শরী'আতের বিভিন্ন বিষয় প্রচার করেন। আমার জানা মতে, শতকরা ৯৫ জন বক্তা যাচাই-বাছাই ছাড়া বক্তৃতা করেন। এ ধরনের প্রচারে বড় ধরনের দু’টি ক্ষতি রয়েছে। (১) এতে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের নামে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে, যাতে জনগণ সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত হচ্ছে (২) এমন বক্তার পরকাল বড় ভয়াবহ। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন ব্যক্তি যদি আমার উপর মিথ্যারোপ করে, তার পরিণাম জাহান্নাম' (বুখারী, মিশকাত হা/১৮৯)। এ দেশের তাফসীর মাহফিলে যারা তাফসীর করছেন, তাদের শতকরা ৯৮ জনই মুফাসসির নন। কারণ তাফসীর করার জন্য অনেক ধরনের বিদ্যার প্রয়োজন। সাথে সাথে তাহকীক করে তাফসীর করা যরূরী। কারণ তাফসীর গ্রন্থগুলি জাল ও যঈফ হাদীছ এবং বানওরাট কাহিনী দ্বারা পরিপূর্ণ। এ থেকে সকলের সতর্ক থাকা উচিৎ। কেননা এতে যেমন দ্বীনের ক্ষতি হয়, তেমনি বক্তা ও শ্রোতার পরকাল ধ্বংস হয়। তাই বহুদিন থেকে ভাবছিলাম যে, জনগণকে মিথ্যা তাফসীর সম্পর্কে সচেতন করার জন্য একটি বই লিখব। কিন্তু অত্যন্ত ব্যস্ততার দরুণ তা এতদিন সম্ভব হয়ে উঠেনি। অবশেষে মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাবলীগী ইজতেমা ২০০৯-কে সামনে রেখে বইটি প্রকাশিত হল- ফালিল্লাহিল হামদ। বইটিতে "তাফসীর কি মিথ্যা হতে পারে?" এই প্রশ্নের মাধ্যমে মূলত মিথ্যা তাফসীর পেশ করা হয়েছে। এর দ্বারা আমরা জনগণকে মিথ্যা তাফসীর সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। কেননা কুরআনের তাফসীর শোনা ও পড়ার নামে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মিথ্যা তাফসীর শুনে ও পড়ে, যার পর নেই বিভ্রান্ত হচ্ছে। ফলে ইসলামের আসল রূপ তাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে। এহেন অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
জন্মঃ শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা চাপাইনবাবগঞ্জের দেবীনগর উপজেলার অধীন মাওলা বক্স হাজীরটলা গ্রামে এক ধার্মিক পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন।পড়াশোনাঃ এলাকার মক্তবে শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি হওয়ার পর তিনি নাচল নবাবগঞ্জ মাদরাসা থেকে হাদীসের অন্যতম কিতাব মিশকাত শরীফ পর্যন্ত পড়েন। তারপর উচ্চ শিক্ষার আশায় ভারত গমন করেন এবং উত্তর প্রদেশের দারুল উলুম মউনাথভাঞ্জান থেকে দাওরা হাদীস শেষ করেন। তিনি দুই বার দাওরা হাদীস শেষ করেছেন। তারপর দেশে ফিরে কর্ম জীবনের পাশাপাশি ফাজিল ও কামিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। তিনি হাদীস ও তাফসীর নিয়ে ১ম বিভাগে কামিল পাশ করেন। শায়খের বক্তব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তিনি মাজহাব ও মাসলাক নির্বিশেষে আম মুসলমানদের উদ্দেশ্যে নসীহত মূলক বক্তব্য দেন । বিশেষ করে জান্নাত, জাহান্নাম, কিয়মাত, আদর্শ পরিবার, কে বড় ক্ষতি গ্রস্ত ইত্যাদি বিষয়ে তারবক্তব্য মাসলাক মাজহাব নির্বিশেষে সকল মুসলমানের হৃদয়ে নাড়া দিতে সক্ষম। ইসলামী শিক্ষাকে বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তিনি অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন যেমন: আল জামিয়াতুস সালাফিয়া, রুপগঞ্জ নারায়নগঞ্জ, আল মাদ্রাসাতুস সালাফিয়া, আটমল, বগুড়া, বীরকুস্টিয়া দারুল হাদীস সালাফিয়া মাদরাসা বগুড়া। এবং অনেক প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে সহযোগিতা করেন। যেমন আল মারকাজুল ইসলামী আস সালাফী, রাজশাহী এবং মহিলা সালাফিয়া মাদরাসা, রাজশাহী।