ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা “জীবনের শেষ বিকেলে অকস্মাৎ ‘কুড়িয়ে পাওয়া ধন’ আমার ভাইটির একটি একটি করে আঙ্গুল টিপে দিতে থাকি আমি। এই বাক্যটা লিখতে গিয়ে ওর সেই হাতের উষ্ণতা এখনো যেন টের পাই। চোখের সামনে ভাসে, একটি আঙ্গুল শেষ না হতেই আরেকটি আঙ্গুল বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাত শেষ হয়ে গেলে খাটের ওপর একটু নাড়াচাড়া করে এগিয়ে দেয় পা।” এই কটি কথা মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে নিউইয়র্কে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসার সময়ে তাঁর সঙ্গে পূরবী বসুর কী গভীর হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার প্রথম থেকে বেলবিউ হাসপাতালের শেষ দিন পর্যন্ত পূরবী বসু প্রায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাঁর সংস্পর্শে ছিলেন। ঐ সময়ে তাঁর চিকিৎসা ও অসুস্থতা সক্রান্ত সমস্ত কথা , সকল শারিরীক জটিলতার খুঁটিনাটি পূরবী বসুর মতো প্রায় আর কারোরই জানা নেই। মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে এক সময়ে কর্মরত চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষক পূরবী বসু একজন পাঠক-নন্দিত প্রথিতযশা গল্পকারও । বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রবাদ পুরুষ হুমায়ূন আহমেদের শেষ ঐ শেষ দিনের কথা-তাঁর অসুস্থতা,যন্ত্রণা, আনন্দ আর স্বপ্নের কথা পূবরী বসুর অনবদ্য রচনায় পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে যাবে, তাকে কাঁদাবে, আমরা নিশ্চিত। সূচি *নিউইয়র্কে হুমায়ূন আহমেদের ক্যানসার চিকিৎসা *ব্যক্তিগত হুমায়ূন *জ্যোৎস্না,বৃষ্টি আর অন্ধকারের গল্প *মাউন্ট রাশমোরের বদলে রকি মাউনটেইন হাই *হুমায়ূন আজ নেই,তাই শাওন…….. *তসালিমা নাসরীনের কাছে খোলা চিঠি:প্রসঙ্গ,হুমায়ূন আহমেদ
Title
নিউইয়র্কে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ
পূরবী বসু বিজ্ঞানী, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক। তাঁর গল্প, প্রবন্ধাবলি ও বিবিধ রচনা নারী-ভাবনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনায় ঋদ্ধ। মুন্সীগঞ্জের সন্তান তিনি। শহরের এক জনপ্রিয় চিকিৎসকের কন্যা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ করেছেন। ফার্মেসিতে অনার্সসহ স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা। তারপর বিদেশ যাত্রা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। মেডিক্যাল কলেজ অভ পেনসিলভ্যানিয়া ও ইউনিভার্সিটি অভ মিসৌরি থেকে লাভ করেছেন। যথাক্রমে প্রাণ-রসায়নে এম.এস. ও পুষ্টিবিজ্ঞানে পিএইচ-ডি । বিজ্ঞানচর্চা তার পেশা। নিউইয়র্কের বিশ্ববিখ্যাত মেমােরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যান্সার সেন্টার গবেষণা ও কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনায় কেটেছে বেশ কিছুকাল । অজস্র গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে সারা বিশ্বের নানা নামী জার্নালে। দীর্ঘ বিদেশবাসের পর দেশে ফিরে আসেন এক খ্যাতনামা ঔষধ প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে। দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক-এ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালকও ছিলেন পরবর্তীকালে । গত কয়েক বছরে তার নারী সম্পর্কিত রচনা নিয়ে কয়েকটি মননশীল গ্রন্থ বেরিয়েছে, যার মধ্যে নারী, সৃষ্টি ও বিজ্ঞান, ‘নােবেল বিজয়ী নারী’, ‘সাহিত্যে নােবেল বিজয়ী নারী’, ‘প্রাচ্যে পুরাতন নারী’, ‘আমার এ দেহখানি’ ও নারী, মাতৃত্ব ও সৃজনশীলতা উল্লেখযােগ্য।। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্যে ২০০৫-এ তিনি অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৪-এ কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।