ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা ধরাবাঁধা যুক্তি আর তথ্যের বিশ্লেষণ ধাপে ধাপে গড়ে প্রবন্ধ রচনা কমলকুমারের ধাতে নেই । নিজের চিন্তা ,অবিজ্ঞতা ও অসুবকে তিনি এক একটি বিষয়ের খাতে বইতে দিয়েছেন। উপন্যাস ও গল্প নামাঙ্কিত রচনার ক্ষেত্রে তিনি যতটা উদ্ভাবনশীল ,প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে যে তার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি ,বইটি সেই লক্ষ্য বহন করে। বিষয় নির্বাচনের পরিধিটি লক্ষ করলে বোঁঝা সম্ভব যে বাংলা নামের দেশটির প্রতি তাঁর প্রেম কী গভীরই না ছিল । এখানকার সাহিত্য এবং শিল্পের নানাবিধ চর্চায় দেশটির যে বিমূর্ত রুপ ফুটে ওঠে,কমলকুমার মজুমদার তারই উপাসক। চল্লিশের প্রগতিশীলদের সঙ্গেতাঁর বিতর্কের মর্ম কথা সংগৃহীত রচনাগুলির মধ্যে আছে। গল্প -উপন্যাস রচনার ক্ষেত্রে যেমন ,প্রবন্ধের ক্ষেত্রেও তিনি ঠিক তেমনই একক যাত্রী। সূচি *রীতির রহস্য *চলচ্চিত্রের গানের ব্যবহার *প্রসঙ্গ বাংলা গান *পটকথা *রোজনামা *রোজনামা:২/রাত্র একাকিনী *বাঙ্গালার টেরাকোটা *ঢোকরা বামার *বাংলার মৃৎশিল্প *নাতুরালিমস *মার্সেল প্রুস্ত বিষয়ে কিছু *‘কথা ইসারা বটে’ ভগবান রামকৃষ্ণ বলিয়াছেন *ফাৎনা মনস্কতা *বঙ্গীয় গ্রন্থ-চিত্রণ *ইদানীন্তন শিক্ষা প্রসঙ্গ *রেখো মা দাসেরে মনে *ভাব প্রকাশ বিষযে *শরৎবাবু ও ব্রাহ্মণ্য *লেখা বিষয়ক *কলকাতার গঙ্গা প্রতীক জিজ্ঞাসা *ছাপাখানা আমাদের বাস্তবতা *গঙ্গানারায়ণ ব্রহ্ম *বাক্ষৎ ভগবৎ দর্শন *রচনা পরিচয় ও প্রাসঙ্গিক তথ্য/প্রশান্ত মাজী
কমলকুমার মজুমদার (জন্ম : ১৭ নভেম্বর, ১৯১৪ - মৃত্যু : ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯) বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক যিনি আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিগণিত। তাকে বলা হয় 'লেখকদের লেখক'। তার উপন্যাস অন্তর্জলী যাত্রা এর অনন্যপূর্ব আখ্যানভাগ ও ভাষাশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলা কথাসাহিত্য বিশেষ করে উপন্যাস ইয়োরোপীয় উপন্যাসের আদলে গড়ে উঠেছে, কমলকুমার মজুমদার সেই অনুসরণতা পরিহার করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের দুরূহতম লেখকদের একজন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিলেন; যেমন সুহাসিনীর পমেটম উপন্যাসে ২৫০ পৃষ্ঠায় যতি-চিহ্ন বিহীন মাত্র একটি বাক্য লক্ষ্য করা যায়। তিনি বাংলা সাহিত্যের দুর্বোধ্যতম লেখক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। দীক্ষিত পাঠকের কাছে কমলকুমার অবশ্যপাঠ্য লেখক হিসেবেই সমাদৃত হলেও অদ্যাবধি তিনি সাধারণ্যে পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেন নি।