রচনাবলী-৩

রচনাবলী-৩

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Similar Category eBooks

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

ভূমিকা
সৈয়দ মুজতবা আলীর (১৯০৪-৭৪)জন্মশতভাবে ঢাকায় তার রচনাবলীর পুনর্মুদ্রন হচ্ছে, এ-সংবাদ আনন্দের । একদিকে অগাত পান্ডিত্য, অন্য দিকে স্বভাবসিদ্ধ রসিকতা,একদিকে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ,অন্য দিকে গভীর অনুভুতি, একদিকে সহজ রচনাশক্তি,অন্যদিকে ভাষা ও ভঙ্গির নিজস্বতা ও অভিনবত্ব তাঁর রচনাকে পাঠকের হৃদয়গ্রাহী করেছে। তাঁর প্রথম গ্রন্ত দেশে বিদেশে বাংলা সাহিত্যের বহুগুণান্বিত ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। এই একটি বই তাকে প্রতিষ্ঠা ও অমরত্ব তারপরও পাঠক সতৃষ্ণনয়নের চেয়ে থেকেছেন তাঁর প্রতি-এরপর তিনি কী উপহার দেন ,তার প্রতীক্ষায় থেকেছেন। মুজতবা আলী নিরাশ করেনরি পাঠককে। তিরিশিটির অধিক বই আমরা পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। কিন্তু সংখ্যা নিয়ে নয়,রচনার গুন ও বৈচিত্র্য দিয়েই আমরা তাঁর প্রকৃত পরিচয় পেয়েছি।
রচনাবলির বর্তমান খন্ডে মুদ্রিত হচ্ছে ধূপছায় (১৩৬৪),দ্বন্দ্বমধুর(১৩৬৫),চতুরঙ্গ(১৩৬৭) এবং ভবঘুরে ও অন্যান্য (১৩৬৯)।শেষোক্ত বইটির অনেকখানি জুড়ে আছে ‘ভবঘুরে’-সেটি ভ্রমণকাহিনীর সগোত্র। বন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে কোনো এক দীর্ঘ অবকাশে লেখক একাকী পদব্রজে ভ্রমণ করতে বেরিয়েছিলেন রাইনল্যান্ড-ট্র্যাম্প বা ভবঘুরেরা যেমন করে থাকে। সেই যাযাবরবৃত্তির বিচিত্র অভিজ্ঞতা এখানে বর্ণিত হয়েছে। এখানে ভ্রমন কথার চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে তাঁর দেখা মানবচরিত্র এবং তাঁর উপলব্ধ মানব চরিত্র। মারিয়ানা ঘরে নিয়ে আসে অজ্ঞাতকুলশীল বিদেশি পথিককে ,একসময়ে বলে ‘তোমাকে আমার ভালো লাগে,তা তুমি ট্র্যাম্পই হও আর স্টুডেন্টেই হও। ‘ ক্যেটেও এমনি যত্ন করে আগন্তুককে ,তাকে ভালোবাসে কিনা বলা যায় না,কিন্তু তাকে বলে নিজের সব কথা। তার প্রেমিক যে ধর্মপ্রচারক হয়ে যেতে চায় এবং ক্যেটেকে আহবান করে সেই পথে, কিন্তু সে দিকে পা বাড়াতে ইচ্ছে হয়্না ক্যেটের। সে ধর্মকে বোঝে অন্যভাবে :‘ধর্ম আমি মানি। খৃষ্টে আমার বিশ্বাস আছে । কিন্তু ধর্মের এ কী উৎপাত আমার উপর। আমি ‘পাব’ ওয়ালীর মেয়ে। আমার ধর্ম বিয়ারে ফাঁকি না দেওয়ার, যে বানচাল হবার উপক্রম করছে তাকে আর মদ না বেঁচে বাড়িতে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করা,মা-বোনের দেখ-ভাল করা-আমি নান হতে যাব কোন দুঃখে।’ এদের জীবনের যে পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে ,তাঁর সঙ্গে দুঃখ মেশানো থাকলেও –কিংবা সেই কারনেই –তা হয়েছে চিত্তাকর্ষক।
টুকরো-টুকরো ছবি এঁকে মানবকজীবনের খন্ডরুপের মধ্য দিয়ে তার সমগ্রতা উপলব্ধির প্রয়াস পাই দ্বন্দ্ব মধুরের‘নোনাজল’,‘মিঠাজল’ ও ‘মণি’তে কিংবা চতুরঙ্গের ‘ক্রন্দসী’তে।এবিষয়ে বিস্তারিত বলার সুযোগ এখানে কম,তাই শুধূ বলি,গভীর সুরে গভীর কথা শুনিয়ে তিনি হালকা সুরে গভীর কথা শুনিয়েছেন, ছলের আশ্রয় নিয়ে জীবন সত্যকে প্রকাশ করেছেন।
এ্ই চারটি বইয়ের অন্য সব লেখাকে মোটা দাগে দুভাগে ভাগ করা যায় । একদিকে আছে গুরুতর সব বিবেচনা ;খৃষ্ট’,‘শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব’ ‘মরহুম মৌলানা [আজাদ]’,‘রবি-পুরাণ’,‘রবীন্দরসের চিত্ররুপ,‘সুকুমার রায়’,‘নজরুল ইসলাম ও ওমর খৈয়াম ‘,‘আচার্য ক্ষিতিমোগন সেন’,‘আচার্য জেতেষচন্দ্র সেন’, ‘হরিনাথ দে’র স্মরণে ‘কই সে’[চন্ডীদাস ও হাইনে সম্পর্ক]’,‘ইভান সেগেভিচ তুর্গেনেফ,’,‘চার্লি চ্যাপলিনৎ’, ‘ল্যাডি চ্যাটারলি’,‘দিল্লী স্থাপত্য’, ‘পৌষ মেলা’,‘ফরাসী বাংলা’,‘বাংলার গুন না জর্মন গুনী’,‘ইংরেজী বনাব মাতৃভাষা’,। এর সঙ্গে ‘সাহিত্যিকের মাতৃভাষা’ প্র্রবন্ধটি যোগ করা যায় হয়তো –তবে তাতে নীরদচন্দ্র চৌধুরী সম্পর্কে যে কটোর মন্তব্য তিনি করেছেন, তা অন্য প্রবন্ধ গুলো থেকে এক পৃথক করেছে। অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান সম্পর্কে তিনি যে বলেছেন, ‘ও-রকম বই পড়ার বয়স আমার বহুকাল হল গেছে’,এ কথা বেলটের নিচে আঘাত করার মতোই শোনায়। তবে তাঁর শেষ প্রশ্নটি খুবই সংগত বলে আমি মনে করি: স্বজাতীয় লেখক ,আপন আপন মাতৃভাষাকে তাচ্ছিল্য করে কে কবে সত্য বড় হয়েছে? এইসঙ্গে ‘ইংরেজী বনাম মাতৃভাষা’ প্রবন্ধ থেকে সামান্য উদ্ধৃত করি:কিন্তু ইংরেজী চিরকাল্ এদেশের শিক্ষার মাধ্যম ,তথা উচ্চাঙ্গ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার বাহন হয়ে থাকবে এ ব্যবস্থা আমার কাম্য বলে আমি মনে করি নে। এ কথা ঠিক যে, আজই যদি আমরা ইংরেজী বর্জন করি। তবে সমূহ ক্ষতিগ্রস্থ হব,কিন্তু কোন দিনই শিক্ষার মাধ্যম রুপে বর্জন করতে পারব না একথা আমরা বিশ্বাস করি নে।’
পেরে তার প্রবন্ধের যে দীর্ঘ তালিকা দিয়েছি, তাতে নানা বিষয়ে লেখা রচনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্মৃতিচারণ, সাহিত্যবিচার, ধর্মতত্ত্ব, তুলনামূলক সাহিত্যলোচনা –সবই আছে। তাতে তাঁর পান্ডিত্যের পরিচয় যেমন মেলে ,তেমনি বহুত্ববাদের তার গভীর আস্থার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তাঁর রসাগ্রাহী চিত্তের সন্ধান আমরা পাই। চণ্ডীদাশ ও হাইনেকে এক কাতারে বসিয়ে আলোচনা করা আর কার সাধ্য ছিল ,বলা কঠিন। আবার অকপটে নিজের মত প্রকাশ করতে তিনি কুন্ঠিত হন নি। যেমন,লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার তাঁর ‘ভালো লাগে না। লরেন্স যা প্রমাণ করতে চেয়েছেন সে অতি সাধারণ জিনিস। এবং ঐ অতিসাধারণ স্বত:সিদ্ধ জিনিস প্রমাণ করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন বিরাট বিরাট কামান। এবং কামানগুলো পরিষ্কার নয়। ‘বইটির যারা অনুরাগী ,তাঁদেরও স্বীকার করতে হবে যে, শেষ বাক্যটি অসাধারণ। অন্যভাগের প্রবন্ধ গুলো হাস্যরসপরিপূর্ন। এ মধ্যে আছে ‘রসগোল্লা’ ,‘গাজা’,‘ত্রিমূর্তি’ (চাচা কাহিনী),’‘নসরুদ্দীন খোজা (হোকা)’,‘চাচা কাহিনী,’ ‘খোশ গল্প’, ‘নিরলঙ্কার’, ‘শের্শে লা ফাম’ প্রভৃতি। মুজতবা আলীর কাছে সাধারণ পাঠকের প্রত্যাশা অধিক পূরণ হয় হালতা রসের যোগানে। ‘খোশ গল্প’ থেকে অ্যাসোসিয়েশন অফ আইডিয়াজের সেই পরম্পরাটি উদ্ধৃত করি, যা দিয়ে বাঁদর ছেলেটি অঙ্ক থেকে তার অনিবার্য গন্তব্য মিষ্টিতে পৌঁছে যায় ;একং,দশং,শতং,সহস্র,লক্ষ্ণী,সরস্বতী,গনেশ,কার্তিক, অগ্রহায়ণ,পৌষ,মাঘ,ছেলে-পিলে,জ্বর,সর্দি ,কাশি,মথুরা,বৃন্দাবন,গয়া ,পুরী,সন্দেশ,রসগোল্লা,মিহিদানা,বোঁদে,খাজা,লেডিকেনি।কিংবা পলডির গল্প। আমেরিকান টুরিস্টকে এক কাসল দেখিয়ে সে বলল, ঐ ওখানে আমার জন্ম হয়। আপনার জন্ম কোন খানে? টুরিস্ট বলর, হাসপাতালে। পলডির সভয় প্রতিক্রিয়া :সর্বনাশ!কি হয়েছিল আপনার?
তবে এসব রচনায় মুজতবা আলী যেখানে ভাবানুযায়ী নতুন ভাষারীতি উদ্ভাবন করেন,সেখান তাঁর বড় রকম জিৎ। যেমন, ‘চাচা-কাহিনী’তে: চাচা বললেন‘সেই ফন ব্রাখেল আমায় বেড় স্নেহ করত,তোরা জানিস। ভরগ্রীষ্মকালে একদিন এসে বললেন ,‘ক্লাইনার ইডিয়ট (হাবা-গঙ্গারাম),এবারে আমার জন্মদিনে তোমাকে তোমাদের গাঁয়ের বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে। শহরে থেকে থেকে তুমি একদম পিলে মেরে গেছ,গায়ের রোদে রঙটিকে ফের একটু বাদামীর আমেজ লাগিয়ে আসবে।” আমি বললুম,“অর্থ্যাৎ জুতোতে পালিশ লাগাতে বলছ?রোদ্দুরে না বেরিয়ে বেরিয়ে কোনও গতিকে রঙটা একটু ‘ভদ্রস্থ’ করে এনেছি,সেটাকে আবার নেটিভ-মার্কা করব? কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা ,তুমি নাহয় আমাকে সঙ্গে নিতে পার;কিন্তু তোমার বাড়ির লোক?তোমার বাবা ,কাকা? ব্রাখেল বললে,“না হয় একটু বাঁদর –নাচই দেখালে।” কিংবা ‘নিরলঙ্কার’:
ওমা ,একি? কোথায় না দেখব, মামা লিনচড হচ্ছে,দেখি হাজার দুই লোক হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে,হেথা কেউ পেটে খিল ধরেছে বলে ডান দিকে চেপে ধরে কাতরাচ্ছে, আরেক দঙ্গল লোক হাসতে হাসতেত মুখ বিকৃত করে কাঁদছে। সে এক ম্যাস হিস্টিরিয়ার হাসির শেয়ার-বাজার কিংবা এবং রেসের মাঠ। ইস্তেক চাটুয্যে হেঁড়ে গলায় চেঁচাচ্ছে,‘চাক্কু মারছে,চাক্কু মাইরা দিছে।’
এ-ভাষায় অনুনকরনীয় ,সর্বসংস্কার মুক্ত ,যথার্থ প্রকাশক্ষম।
এইসব রচনার মধ্যেও মুজতবা আলী ছড়িয়ে দিয়েছেন তার নানা ভাষার জ্ঞান,নানা বিষয়ে অধ্যয়ন ও ঔৎসুক্যজনিত তথ্যাদি।তিনি তারা দেখাতে গিয়ে অঙ্ক শেখান না, কিন্তু তারা দেখতে দেখতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের খবর দিয়ে ফেলেন।
তাঁর লেখা থেকে আমার জ্ঞান লাভ করি ,বিমল আনন্দ পাই। এক সময়ে মনে মনে বলি, এমন আর হয় না।
আনিসুজ্জামান
৮ সেপ্টেম্বর -২০০৪
সূচীপত্র
*দেশ ভ্রমণ
*রসগোল্লা
*চাপরাসী ও কেরানী
*চিল্কা
*বাঙালী
*সুকুমার রায়
*ভাষার জমা-খরচ
*দর্শনচর্চা
*লেসে ফ্যের
*মার্কিনী ভাত
*বাঙালী মেনু
*রন্ধন-যজ্ঞ
*‘বাঁশবনে-’
*বাংলার গুন না জর্মন গুনী
*শিক্ষা-প্রসঙ্গে
*পোলেমিক
*চরিত্র বিচার
*দেয়ালি
*গানের কথা : ভারত ও কাবুল
*উনো,হিন্দি,ক্রিকেট
*বুদ্ধং,শরণং
*আর ট্রাভেল
*ভাষা ও জনসংযোগ
*ইংরজী বনাম মাতৃভাষা
*টুকিটাকি
*দাবা খেলার জন্মভূমি কোথায়
*পিকনিয়া
*সাহিত্যিকের মাতৃভাষা
*আসা-যাওয়া
*দেহলি –প্রান্ত
চর্তুরঙ্গ
*রবি –পুরাণ
*শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
*পুষ্পধণু
*মরহূম মওলানা
*নসরুদ্দীন খোজা (হোকা)
*নজরুল ইসলাম ও খৈয়াম
*ত্রিমূর্তি (চাচা-কাহিণী)
*মামদোর পুনর্জ্জম
*দিল্লীর –স্থাপত্য
*বেজো না চরণে চরণে
*ইভান সের্গেভিচ তুর্গেনেফ
*গাঁজা
*হরিনাথ দে’র স্মরণে
*অনুকরণ না হনুকরণ?
*ফরাসী বাংলা
*চার্লি চ্যাপলিন
*ফিল্মের ভাষা
*ক্রন্দসী
*ছুছুন্দর কা সিরপর চামেলি কা তেল
*আর্ট না অ্যাকসিডেন্ট
*আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন
ভবঘুরে ও অন্যান্য
*খৃষ্ট
*কই সে?
*খোশ গল্প
*শের্শে না ফাম
*লেডি চ্যাটারলি
*হুসিয়ার
*পৌষ মেলা
*পঞ্চতন্ত্র
*দেহি দেহি
*নিরলঙ্কার
*আচার্য তেজেশচন্দ্র সেন
*নাত্যচ্চশিক্ষা
*বাঙলাদেশ
*গেজেটেড অফিসার কবি
*বাচ্চু ভাই শুক্ল
*বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী
*রবীন্দ্র রসের ফিষ্মরুপ
*সম্পাদক লেখক পাঠক
*রবীন্দ্র্র রচনাবলী
*বাঙলাদেশ
*ভবঘুরে
দ্বন্দুমধুর
*নোনাজল
*নোনা মিঠা
*মণি
*চাচা-কাহিনী
*বাঁশী
  গ্রন্থ-পরিচয়।
Title রচনাবলী-৩
Author
Publisher
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

5.0

1 Rating and 0 Review

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

রচনাবলী-৩

সৈয়দ মুজতবা আলী

৳ 430 ৳500.0

Please rate this product