ফ্ল্যাপে লিখা কথা ১. বইয়ের নাম - নগরের বিস্মৃত আঁধারে ২. লেখকের নাম - একুয়া রেজিয়া ৩. লেখক পরিচিতি - ২০১০ সাল থেকে একুয়া রেজিয়া নাম নিয়ে, ব্লগিং-এর মাধ্যমে আমার লেখালেখির সূচনা। লেখাপড়ার বিষয় চার্টার্ড একাউন্টেন্সি। আমি স্বাধীনচেতা, অন্যমনা। জীবনানন্দ দাশের কবিতার খুব ভক্ত। রবি ঠাকুরের সব লেখাই আমার প্রিয়। বিদেশী লেখকদের মধ্যে মাক্সিম গোর্কি, ও হেনরীর লেখা পছন্দ। লেখালেখি করতে ভালোবাসি। নিজের লেখার চরিত্রগুলো আমার বেশ আপন মনে হয়। স্কুল জীবন থেকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, এস্ট্রোনোমিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত আছি। নগরের বিস্মৃত আঁধারে আমার প্রথম বই। ৪. বইটি সম্পর্কে - ব্লগিং করতে এসে এক সময় আরও অনেকের সাথে সাথে পরিচয় হয় একুয়া রেজিয়া নামের একজন ব্লগারের সাথে। চাক্ষুস পরিচয়ের আগেই তার সাথে আত্মিক যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে যায় অজান্তেই কখন যেন। মুগ্ধ হয়ে তার লেখা পড়ি। কোন বাক্য, কোন শব্দ, কোন বানান নিয়ে মনে কোন প্রশ্ন জাগলে তা নিয়ে আলোচনা হয়। অক্ষর বা শব্দবিন্যাস নিয়ে খেলতে খেলতে খেলার সাথীদের সাথে মেতে উঠি। হৃদ্যতা বাড়ে পরস্পরের, সাথে সাথে বাড়তে থাকে একেকজনের লেখার মান আর উৎকর্ষতা। একুয়া রেজিয়ার স্বকীয়তা উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত ঝিকমিক করতে থাকে, ব্লগ আকাশ আলোকিত হতে থাকে দিনের পর দিন। একুয়া রেজিয়ার লেখা ছোটগল্প একে একে প্রকাশিত হতে থাকে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য পাতায়, সাময়িকী ও ম্যাগাজিনে। প্রবল পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে এগুলো স্বল্প সময়ের মাঝে। একজন লেখকের জন্ম হয়, ডালপালা মেলে ক্রমে সে বেড়ে ওঠে তরতর করে। এমনই বাছাই করা পনরটি গল্প নিয়ে মলাটবদ্ধ হয়ে বেরুচ্ছে নগরের বিস্মৃত আঁধারে। এ তো সাফল্য নয়, এ যে একুয়া রেজিয়ার শুরু মাত্র। তার এগিয়ে চলার পথের প্রথম সোপান। সাহিত্য অঙ্গনে এই যে ছোট্ট একটি পদক্ষেপ, এটাই হয়ে উঠবে নতুন ধারার মহান সূচনা। অদূর ভবিষ্যতের হাতছানি এড়িয়ে যাবার সাধ্য কারো নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, এই শুরুর ঐতিহাসিক পটভূমি।
ভুমিকা আমার গল্প লেখার পেছনের গল্পটা বেশ ছোট। 'একুয়া রেজিয়া' নামের আড়ালের মানুষটি আর দশটা সাদামাটা মানুষের মতোই একজন। আমার ভাবনাগুলোকে কোন নির্দিষ্ট শিরোনাম ছাড়া লিখে যেতে যেতে গল্প লেখার পথ চলা শুরু হয়। আমার চারপাশে দেখা বিভিন্ন মানুষের জীবনের কথাগুলো গল্প বা গল্পের চরিত্র হয়ে আমার লেখনীতে জেগে ওঠে। একটা গাছকে যেমন জীবিত রাখার জন্যে, সতেজ রাখার জন্যে তাতে রোজ জল সঞ্চালন ও পরিচর্যা করতে হয়, ঠিক তেমনি করে আমার লেখালেখির পেছনে বেশ কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত উৎসাহ, ভালোবাসা এবং আশির্বাদ দিয়ে গিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই মাকে লেখালেখি করতে দেখে বড় হয়েছি। ক্লাস ফোরে পড়ার সময় জীবনে প্রথম গল্প লিখেছিলাম। ছোটবেলা থেকেই ভীষণ বই পড়ুয়া ছিলাম। মাঝে মাঝেই মনে হতো, যা ভাবছি,যা দেখছি তা লিখে ফেললে কেমন হয়। তাই ডায়েরী লেখার অভ্যাসটা ছিলো ক্লাস ফোর থেকেই। তারপর সময়ের সাথে সাথে যত বড় হতে থাকি ডায়েরীতে লেখা কথাগুলো কেমন যেন ছোট হতে থাকে। লেখার চেয়ে জানার আগ্রহটা বেড়ে যায় তখন। মূলত মানুষ ৩টি উপায়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে... অনেক টাকা থাকলে- বিশ্ব ভ্রমণ করে অল্প টাকা থাকলে- বই পড়ে। আর টাকা না থাকলে- মানুষের সাথে কথা বলে, তাদের অভিজ্ঞতা জেনে। আমি সব সময়ই দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মানুষের দলে ছিলাম। দিন ভালোই কেটে যাচ্ছিলো। ২০১০ সালে 'চতুর্মাত্রিক'ব্লগে এসে আবার নিজের মনের এলেবেলে কথাগুলোকে লিখে ফেলার তাগিদ অনুভব করি। সেই থেকে মাঝে মাঝে টুকটাক গল্প লিখি। ব্লগ থেকে কিছু পত্রিকায়, গল্প সংকলনে, মূখবইয়ের ফ্যান পেইজে আমার গল্পগুলো বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে শুরু করে। আমার গল্পগুলো কেউ পড়ছে, আমার লেখা পড়ে কেউ পছন্দ করছে বা আমার লেখা কাউকে ভাবাচ্ছে, এ ধরণের অনুভূতি সব সময়ই আমার ছোট্ট মনকে আনন্দে অভিভূত করে ফেলে। “নগরের বিস্মৃত আঁধারে” বইটির গল্পগুলো গত দু’ বছর ধরে একটু একটু করে যত্ন করে লেখা। এই বইটির গল্পগুলো যদি পাঠকের ভালো লাগে একটুও, সেটাই আমার সার্থকতা।
মাহরীন ফেরদৌস, জন্ম ঢাকায়। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসী। লেখাপড়া করেছেন ব্যবসায় শিক্ষা ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি বিষয়ে। সাহিত্য চর্চার সাথে জড়িত আছেন ২০১০ সাল থেকে। কয়েক বছর ‘একুয়া রেজিয়া’ নামের আড়ালে থেকেই প্রকাশ করেছেন গল্প, উপন্যাস। পেয়েছেন পাঠক-প্রিয়তা। ‘অরিগামির গোলকধাঁধায়’ তাঁর পঞ্চম গল্পগ্রন্থ।