ভূমিকা পশ্চিমা দুনিয়া তেলের লোভে গ্রাস করতে চাইছে মধ্য-প্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোকে। এজন্য নীল নকশাও তৈরি করেছে ওরা। ওদের এই মাষ্টারপ্ল্যান্টের নীল নকশা ঘটনাচক্রে এসে পড়ল মাসুদ রানার হাতে। ওই কাজে বাধা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে স্পাই তারকাদের নিয়ে তৈরি করা হলো একটি চৌকুস দল। তারা ওই কাজ সারাতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ল আরেক ঝামেলায় বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনছে এক উন্মাদ বিজ্ঞানী। এখন এই বিজ্ঞানীকে বাধা দিতে হবে,কিন্তু কীভাবে? নানা সিরিজের ৪১৫ ও ৪১৬ তম বেইতে এই ঘটনারই বর্ণনা রয়েছে। এবার কাহিনির কয়েকটি লাইন এখানে তুলে দিচ্ছি; ইয়োস দ্বীপ রেঞ্জে আসতে এয়াররিয়াল ড্রোন আকাশে তুলতে বলল রানা। ক্যাপ্টেন সিরাজের কন্সোলের সামনে বসল অনিল। পাঁচ মিনিট পর ভেসে উঠল ইউএভি। ফু-চুং চলে গেল বোট গ্যারেজে। তৈরি রাখবে রিজিড ইনফ্লেটেবল বোট। ওর নির্দেশে রওনা হবে পাঁচজন কমাণ্ডো। ইয়োস দ্বীপে মাত্র একটা ডক। ওরা ধারণ করেছে ওটা কড়া পাহারা দেওয়া হয়। হয়তো ওই ডক দিয়েই উঠতে হবে দ্বীপে। উড়ন্ত ইউএভির ভিডিও ফিড এলে ওরা আগেই বুঝতে কী ধরনের বাধার মুখে পড়বে। যদি প্রয়োজন পড়ে তাই ডাইভ টিম প্রস্তুত রাখছে ডিসকভারি ১০০০-কে। তৈরি রাখা হচ্ছে ট্যাংক ও ইকুইপমেন্ট। প্রয়োজনে পানির নিচে দিয়ে গিয়ে হামলা করবে দশজন ডাইভার। মার্ভেলের বেশিরভাগ ক্রু এখন সশস্ত্র। জাহাজের প্রতিটি অস্ত্র পরিষ্কার করা হয়েছে....। সর্বনাশের দূত ১ ও কাহিনীর টানটান উত্তেজনায় ভরপুর । দুই খন্ডের এই কাহিনী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে ধরে রাখে। দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদের জন্য রনবীর আহমেদ বিপ্লবকে ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রহস্য-রোমাঞ্চ গল্পের সাহিত্যধারাকে প্রায় একা হাতে জনপ্রিয় করে তুলেছেন যে মানুষটি তিনি কাজী আনোয়ার হোসেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমেই তৈরি হয়েছে এই সাহিত্যধারার বিশাল পাঠকশ্রেণী। বিদ্যুৎ মিত্র এবং শামসুদ্দিন নওয়াব ছদ্মনামে লিখেছেন অসংখ্য গল্প। পাঠকদের কাছে পরিচিত প্রিয় কাজীদা নামে। প্রখ্যাত গণিতবিদ ও সাহিত্যিক বাবা কাজী মোতাহের হোসেন ও মা সাজেদা খাতুনের ঘরে ১৯৩৬ সালের ১৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন কাজী শামসুদ্দিন নওয়াব। পরিবারের সঙ্গীতচর্চার ধারাবাহিকতায় প্রথমে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ১৯৬৩ সালে বাবার দেওয়া টাকায় সেগুনবাগিচায় প্রেসের যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে সেই প্রেস থেকেই নিজের সম্পাদনায় পেপারব্যাকে সৃষ্টি করেছেন কুয়াশা, মাসুদ রানা, তিন গোয়েন্দার মতো চিরতরুণ চরিত্রগুলোর। কাজী আনোয়ার হোসেন এর বই ‘কুয়াশা’ সিরিজের মাধ্যমেই মূলত রহস্যধারার বই প্রকাশ শুরু সেবা প্রকাশনীর। এরপর এক বন্ধুর প্রকাশিত জেমস বন্ডের ‘ডক্টর নো’ পড়ে ঠিক করেন বাংলাতেই লিখবেন এই মানের থ্রিলার। সালটা ১৯৬৫, মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরে এলেন চট্টগ্রাম, কাপ্তাই ও রাঙামাটি। সাত মাস সময় নিয়ে লিখলেন মাসুদ রানা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ধ্বংস পাহাড়’। এই সিরিজের কাজী আনোয়ার হোসেনের বই সমূহ এর মধ্যে প্রথম তিনটি বাদ দিলে বাকিসবগুলোই লেখা হয়েছে বিদেশি গল্পের ছায়া অবলম্বনে। কাজী আনোয়ার হোসেন এর বই সমগ্র রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যের যে পিপাসা পাঠকের মনে তৈরি করেছে তা মেটাতে সাড়ে চারশোরও বেশি মাসুদ রানার বই প্রকাশ করতে হয়ছে সেবা প্রকাশনীকে, যার ধারাবাহিকতা আজও চলমান।