"একাত্তরে বন্দী মুজিব : পাকিস্তানের মৃত্যুযন্ত্রণা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: নির্জন। নিঃসঙ্গ। বিভীষিকা। মৃত্যুকূপ যেন! বাঙালী জাতিরাষ্ট্রের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্দী। বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ ঘােষণা, পরিচালনা, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযােগে অভিযুক্ত। সামরিক ট্রাইবুনালে বিচারের সময় ইয়াহিয়া খানের ২৬শে মার্চের ভাষণ শােনানাে হলাে। তিনি বললেন: এই যদি অভিযােগ, তাহলে আমার কোনাে আইনজীবির প্রয়ােজন নেই। তবুও রাষ্ট্রপক্ষ এ. কে. ব্রোহীকে নিয়ােগ দিলাে। বঙ্গবন্ধু বললেন: এসবের প্রয়ােজন নেই। ইয়াহিয়া খান ঘােষণা করেছেন ‘মুজিবকে শাস্তি পেতেই হবে। প্রধান। সামরিক আইন প্রশাসক তার নিয়ােজিত মিলিটারি কোর্ট। ক্যামেরা ট্রায়াল। প্রিজাজড রায় লিখিত। এ ক্ষেত্রে বিচার হবে প্রহসন। সেলের সামনে কবর খোঁড়া শেষ। অন্যদিকে বিশ্বজনমতের চতুর্ভূজ চাপ: মুজিবকে মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। পাকিস্তান পরাজিত। লন্ডভন্ড। ইয়াহিয়া খান বন্দী। ভুট্টো ক্ষমতা দখল করলেন। বঙ্গবন্ধুকে বললেন, ‘লেস দ্যান লুজ কনফেডারেশন, যৌথ বিবৃতি, টাইপ করা কাগজ তার হাতে। চারপাশে উদ্যত সঙ্গীন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমাকে গুলি করতে পারাে, মেরে ফেলতে পারাে, কিন্ত আমার কোন সম্মতি এতে পাবে না। আগে দেশে যাবাে। জনগণের কাছে শুনবাে।' অনমনীয় । গ্রেফতারের পূর্বেই যিনি বলেছিলেন, “যে মানুষ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত, কেউ তাকে মারতে পারে না।” বইটিতে মৃত্যু-সেল থেকে জেলার হাবিব কী করে গােপনে তার বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এলেন, ভুট্টোর সঙ্গে সংলাপের গােপন টেপ, খসড়া জবানবন্দীর ছিন্নপত্র ও জাতিক-আন্তর্জাতিক চতুর্ভূজ ষড়যন্ত্র ও প্রভাব সবই ইতিহাসের রহস্য ঘেরা চমকপ্রদ ঘটনাবলি আলােচিত।
Professor Abu Sayed অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এককালীন শিক্ষক ও রাকসুর ভিপি । সত্তরের নির্বাচনে নং সেক্টরের উপদেষ্টা ও ক্যাম্প ইনচার্জ। গণপরিষদে বাহাত্তরের খসড়া সংবিধান সংরচনা কমিটির অন্যতম সদস্য। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক পাবনা জেলা গভর্ণর ' ডেজিগনেট । সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া জাতীয় প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অভিজ্ঞতাঋদ্ধ। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ফ্যাক্টস্ এন্ড ডকুমেন্টস: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, মেঘের আড়ালে সূৰ্য, ছোটদের বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব, আঘোষিত যুদ্ধের ব্ল-প্রিন্ট, ব্রুটাল ক্রাইমস্, বাংলাদেশের স্বাধীনতা: যুদ্ধের আড়ালে যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ: সিক্রেট ডিপ্লোম্যাসি, মুক্তিযুদ্ধ: উপেক্ষিত গেরিলা, জেনারেল জিয়ার রাজত্ব, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিত ও গোলাম আযম, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক রায়, বাংলাদেশের গেরিলা যুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ থ্রেট অব ওয়ার, একাত্তরে বন্দী মুজিব: পাকিস্তানের মৃত্যু যন্ত্রণা, সমাজ বদলে বঙ্গবন্ধুর ব্ল-প্রিন্ট, মুক্তিযুদ্ধের দলিল লণ্ডভণ্ড এবং অতঃপর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা: কুটনৈতিক যুদ্ধ ইত্যাদি।