"ফিরতে হবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বইটির প্রতিটি লেখার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মানুষ। মানুষকে ঘিরেই সমাজ। মানুষকে নিয়েই দেশ। মানুষের প্রয়ােজনেই অর্থনীতি আর বাণিজ্য। নিবন্ধগুলােকে তাই তিনভাগে বিন্যস্ত করা হয়েছে, (ক) মানুষ ও সমাজ (খ) দেশ ও গণতন্ত্র (গ) বাণিজ্য ও অর্থনীতি। প্রথম পর্বে, দুঃখী জীবন, মরমীবাদ, মানস গঠন ও চেতনা। বিবর্তনের মত গভীর মননশীল পর্যালােচনার পাশাপাশি ‘হাভাতে’, ‘কথার পিঠে কথা’ এসব রম্য লেখায় নির্মল কৌতুক ও হাস্যরসের সমাহার ঘটেছে। দ্বিতীয় পর্বে, হৃদয়গ্রাহী আলােচনা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ আর গণতন্ত্রের ওপর। সমকালিন বিষয়ে স্বচ্ছ ও যুক্তিনির্ভর। দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায় লেখাগুলােতে। নিকট অতীতে সমঝােতা, নিরপেক্ষতা, সমতা এসব শ্রুতিমধুর শব্দের আড়ালে যে কপটতার খেলা চলেছিল, তার স্বরূপ উন্মােচন করা হয়েছে তথ্য ও তীক্ষ যুক্তির অস্ত্র দিয়ে। উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রায়ন প্রক্রিয়া। তৃতীয় পর্বে, অর্থনীতি আলােচনায় ফুটে উঠেছে অনেক ভরসার কথা, অনেক সম্ভাবনার কথা, অনেক অর্জনের কথা, অনেক। স্বপ্নের কথা। সব স্বপ্নই বাংলাদেশকে ঘিরে, বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে। মন্দা, মূল্যস্ফীতি, শিল্প, রেমিটেন্স এসব কিছুই আলােচিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।
খােন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ১৯৪১ সনের ৪ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। গােপালগঞ্জ মডেল হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ঢাকা বিশ্বদ্যিালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পরবর্তীতে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত ইনষ্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশন থেকে এম,বি,এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৩ সনে তল্কালিন হাবিব ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের প্রথম ফ্যাকাল্টি সদস্য এবং পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের প্রথম মহাব্যবস্থাপক ছিলেন । তিনি সােনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। ২০০০ সনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে সরকারী দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন । ২০০৮ সনে তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৯০ সনে অন্তবর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত আর্থিক খাত সংস্কার বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য, ২০০১ সনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ কর্তৃক গঠিত অনুরূপ টাস্কফোর্সের উপপ্রধান এবং ১৯৯৭ সনে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গঠিত ‘ব্যাংকিং সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়নের কার্যকলাপ’ বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ উদ্যোগে গঠিত হজ ফিনান্স কোম্পানীর নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়- এর এমিরিটাস ফেলাে, । বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আজীবন সদস্য ও প্রাক্তন সহ-সভাপতি, গ্রীন ইউনিভার্সিটির সিন্ডিকেট সদস্য, বাংলাদেশ সােসাইটি ফর ট্রেনিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ এম,বি,এ এসােসিয়েশনের আজীবন সদস্য ও প্রাক্তন সভাপতি। এছাড়া তিনি। ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশাের প্রতিষ্ঠান কচি-কাঁচার মেলার কেন্দ্রীয় পরিচালক। তিনি একজন আর্থ- সামাজিক বিশ্লেষক, কলামিষ্ট, টক শাে ব্যক্তিত্ব ও লেখক। তাঁর রচিত কিছু স্মৃতি কিছু কথা, “ফিরতে হবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে’ এবং ব্যাংকিং সংস্কার ও ব্যবস্থাপনা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে।