ফ্ল্যাপে লিখা কথা `নীল জোছনা ফুল’ একখণ্ড অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ছবি। যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতী হাজার বছরের উত্তরাধিকার। উপন্যাসের কেন্দ্রিয় চরিত্র রমজান সাহেব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । তার চোখ দিয়ে বর্তমান বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলা ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষক রাজনীতির হালফিল সুক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এই উপন্যাসে। ‘নীল জোছনার ফুল’ মূলত গ্রামীন পটভূমিতে লেখা। এ গ্রাম রমজান সাহেবের জন্মভূমি একখণ্ড বাংলাদেশ। এই গ্রামে হিন্দু-মুসলমানের যুগের পর যুগ সহাবস্থান এবং একে অপরের ধর্ম সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে আমাদের সামনে তুলে আনে। রমজান সাহেবের জীবনে ঘটে যাওয়া স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ,সর্বোপরি উপন্যাসের নায়িকা যূথির রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমান ধারার ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি আবহমান বাংলার লৌকিক সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে। সেই সাথে আছে রমজান সাহেব এবং যূথির প্রেমের কাহিনী। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক অতীত ও বর্তমানের মধ্যে একটা সেতু বন্ধন তৈরি করতে পারবেন। সর্বোপরি বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের পরিচয়কে সঠিকভাবে জানতে পারবেন।
আবু ইসহাক হােসেন জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ থানার তালম গ্রামে ২৫ নভেম্বর ১৯৭৪ সালে। তবে মায়ের দেওয়া তথ্য মতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাঝামাঝি সময় তার জন্ম । চাচার কাছে পড়াশােনার হাতেখড়ি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্সসহ মাস্টার্স । একই বিভাগে ফকির লালন সাঁইয়ের উপর পিএইচডি গবেষণারত। কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে লেখালেখি শুরু হলেও উপন্যাস, গল্প, ছড়া লিখছেন সমানভাবে। তবে তাকে সবচেয়ে বেশি টানে একাডেমিক গবেষণা। ইতােমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষক হিসেবে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন । তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাধর্মী গ্রন্থ । লালন ফকিরের উপর রচিত তাঁর মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ দেশে বিদেশে সমাদৃত । তিনি ক্রমেই নিজেকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় । ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিতভাবে অচিন মানুষ নামে বাউল দর্শনের উপর গবেষণাধর্মী অনুষ্ঠান গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা করে আসছেন। প্রায় দীর্ঘ সাত বছর তিনি নতুন কল্লোল সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে একতারা নামক একাডেমিক জার্নাল সম্পাদনা করছেন। গবেষণার জন্য জাতীয় মানবধিকার সােসাইটি স্বর্ণপদক, বজ্রকণ্ঠ সম্মাননা ও বাউল বাজার সম্মাননা তিনি লাভ করেছেন।