ফ্ল্যাপে লিখা কথা যে কোনো শিল্পী তাঁর সৃজন ও নির্মানের মধ্য দিয়ে একটি এপিক খুঁজে বেড়ান। .. আর সেই শিল্পী যদি হন কথা শিল্পী তিনি যে নিরন্তর এপিক খুঁজতে খুঁজতে নিজের আয়ুক্ষয় করবেন এটাই স্বাভাবিক। ছোটগল্পকার মোহাম্মদ আব্দুল মাননান সেই পথেই হাঁটছেন....। কথাসরিৎসাগরের পার্বতীর যে কোনো সিদ্ধ পাঠকও কথাকারের কাছে এমন কথা শুনতে চান যা নতুন ও মনোমহর...। ইতিমধ্যে মান্নানের গল্পও নতুন এবং মনোমহর। ইতিমধ্যে মান্নানের ৮টি গল্পসংকলন বেরিয়েছ্ সংকলিত গল্পগুলোর প্রত্যেকটিরই নতুন; কোনো গল্পেই আখ্যানের পুনরাবৃত্তি নেই; সব গল্পই পাঠককে চুমকের মতো টানে...। মান্নানের আখ্যান-বয়নকৌশলও নতুন। তাঁর একটি গল্পেই অনেক গল্প থাকে-তিনি পরীক্ষানিরীক্ষার নামে ‘গল্পহীন’ ছোটগল্প লেখেন না -যা এ সময়ের একটি বিরল অথচ উজ্জ্বল প্রবণতা। গল্প তো নিরঙ্কুশভাবে মানুষের জীবনেরই গল্প; তার সীমাবদ্ধতার গল্প । সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে মানুষের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন এবং স্বপ্নভঙ্গই তো লেখকের কলমে গল্প হয়ে ওঠে। গল্প লেখক মান্নান এক্ষেত্রে অনেকটাই অগ্রগামী। তাঁর গল্প মানুষের অন্তর্গত আলো-আঁধারের বিভায় উদ্ভাসিত..। লেখকের ‘রক্তদ্বয়’র ৭ টি গল্প ভিন্নস্বাদপ্রত্যাশী-গভীর জীবনবোধতাড়িত পাঠক-পাঠিকাদের আলোড়িত করবে এ প্রত্যয় আমাদের রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, এ গল্প সংকলনটি হবে সমাজ ও জীবনঘনিষ্ঠ কথা সাহিত্যের ধারায় একটি নতুন সংযোজন।.।
সূচিপত্র * হত্যা কিংবা আত্নহত্যা * আমি যে আর সইতে পারি না * রক্তদ্বয় * মুঠোফোন ছিলো না তখন * অন্ধকারের উৎস হতে * চুরি হয়ে গেছে রাজকোষ * ২০৩৭ সালের গল্প
মােহাম্মদ আবদুল মান্নান ১৯৩৫ সালের ২ এপ্রিল তৎকালীন ফরিদপুর জেলার পাংশা থানার অন্তর্গত চরপাতুরিয়া গ্রামের এক সম্রান্ত মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মৌঃ মােহাম্মদ আবদুল খালেক বিশিষ্ট বিদ্যোৎশাহী, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী এবং শ্রদ্ধাস্পদ শিক্ষক হিসাবে বিশেষভাবে পরিচিত ' ছিলেন। মাতা, অলংকারপুর গ্রামের মােল্লা বাড়ির কন্যা মরহুমা সৈয়েদুন্নেসা বেগম অল্প বয়সেই ইন্তেকাল করেন। তিনি স্থানীয় মৃগী হাইস্কুল থেকে ১৯৫৫ সালে মেট্রিক পাশ করেন এবং মাগুরা কলেজ, মাগুরা ও কুষ্টিয়া কলেজে আইএ ও বিএ অধ্যায়ন করেন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ পাশ করেন। তিনি সরকারি চাকরিতে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালে প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সরকারি চাকরিতে দায়িত্বশীল পদে কর্মরত থাকা সত্ত্বেও তিনি সাহিত্য সাধনায় ব্যাপৃত ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বকাল থেকেই তার কবিতা ও প্রবন্ধ দৈনিক পত্রিকাসমূহে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলা একাডেমি, ঢাকা-এর সদস্য ছিলেন।। লেখক সনেট, ছড়া, শিশুতােষ কবিতা লিখে খ্যাতি লাভ করছেন। তার প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থগুলির মধ্যে সনেট ও অন্যান্য কবিতা ‘প্রদোষ তীর্থে রঙধনু’ একগুচ্ছ সনেট’ ‘সনেট পংক্তিমালা’ সর্বাধিক পরিচিত। এতদ্ব্যতীত বাংলাদেশ ও ভারতের নির্বাচিত লেখকদের নিয়ে প্রদর্শিত ২০টি যৌথ কবিতাগ্রন্থে তার লেখা স্থান পেয়েছে।।