"ডায়াবেটিস ব্লাডপ্রেশার কোলেস্টেরল হার্ট এটাক" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ একসময় সংক্রামক ব্যাধি ছিল বিশ্বজুড়ে বড় হুমকি। কিন্তু সময় গেছে, সমাজ বদলেছে, জীবনাচরণ পালটেছে। অসংক্রামক রােগ বা ক্রনিক রােগ এখন বড় হুমকি, বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলােতে। ডায়াবেটিস, হার্ট এটাক, স্ট্রোক, ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের ক্রনিক রােগ হল অসংক্রামক রােগ। সে সঙ্গে এদের সহচর উচ্চরক্তচাপ ও রক্তের উঁচুমান কোলেস্টেরল। স্থূলতাও বড় ঝুঁকি। বাংলাদেশেও এসব রােগ এখন স্বাস্থ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সামাজিক অবস্থান্তর, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও দ্রুত নগরায়নের ফলে-শরীরচ্চার অভাবে। এ কারণে বাড়ছে হৃদরােগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টেরল। সমাজের এই পরিবর্তন বেশি দেখা যাচ্ছে তরুণদের মধ্যে, ফাস্টফুড খাচ্ছে তারা, পান করছে কোমলপানীয়, ধূমপান করছে, অলস জীবনযাপন করছে, শরীরচর্চা করছে না। তাই ক্রমে বাড়ছে এ সমস্যা। যদি তরুণ বয়স থেকেই জীবনাচরণে পরিমিতি আনা যায়, স্বাস্থ্যকর আহার, শরীরচর্চা, অভ্যাস করা যায়, তাহলে পরিণত বয়সে ক্রনিক এসব রােগ হওয়া অনেকটা রােধ করা যাবে। প্রতিরােধের এই সহজ কৌশলগুলাে বলার চেষ্টা করা হয়েছে গ্রন্থটিতে। ক্রনিকরােগ হলে এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল অথচ জীবনাচরণে সহজ পরিবর্তন এনে যদি এদের প্রতিরােধ করা যায় তাহলে তা হবে অনেক সাশ্রয়ী আর সেই পরিবর্তন শুরু হােক তরুণ বয়স থেকেই। সেই বয়সে স্বাস্থ্যে বিনিয়ােগই যথার্থ। পরিণত বয়সে প্রতিরােধ শুরু হলেও রােগের অগ্রগতি ঠেকানাে যাবে, হওয়াকে বিলম্বিত করা যাবে। এসব কৌশল জানা প্রয়ােজনীয় হতে পারে আপনাদের জন্য।
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী এমবিবিএস, এম ফিল। এফসিপিএস বর্তমানে বারডেম, ইব্রাহীম মেমােরিয়েল ডায়াবেটিক সেন্টার, ঢাকায় ল্যাবরেটরি সার্ভিসের ডিরেকটর। জন্ম সিলেট ১৯৪৭ সালে। লেখাপড়া শুরু সিলেটে শিশুস্কুলে এরপর রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন পাঠভবনে, আবার দেশে স্কুল-কলেজে ও মেডিকেল কলেজে এবং পরে দেশে ও বিদেশে নানা উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০০৪ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর সরকারি চাকরি জীবনে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন। অধ্যক্ষও ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা করেছেন লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা, প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য ভ্রমণ করেছেন ইংল্যান্ড, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকা। তাঁর গবেষণার বিষয় প্রাণ রসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা শিক্ষা পদ্ধতি। তিনি নিউইয়র্ক সায়েন্স একাডেমীর নির্বাচিত সদস্য। দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান জার্নালে তিনি অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন ও লিখছেন। জনপ্রিয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের লেখক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কয়েকটি পাঠ্যপুস্তকও বাংলায় অনুবাদ করেছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৩৮টি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য শেরে বাংলা জাতীয় পুরস্কার-২০০৯ লাভ করেন। স্ত্রী কামনা, মেয়ে স্বাগতা, সুস্মিতা ও ছেলে শুভ্রতকে নিয়ে ব্যক্তিজীবন।।