ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির সবচেয়ে বড় গর্বের নাম। বক্ত সংগ্রামের এক মহান অধ্যায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ আর পৈশাচিক উল্লাসের বিরুদ্ধে, অস্তিত্বের মর্মমন্ত্রে জেগে উঠেছিল এদেশের মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের সেই মুক্তিকাঙ্ক্ষাই তাদের যোদ্ধা বানিয়ে দেয়। আধুনিক যুদ্ধবিদ্যায় শক্তিশালী এক নিয়মিত বাহিনীর বিরুদ্ধে অসাধারণ এক লড়াইয়ে, বিশ্ব দেখেছে দেশ প্রেমের এক বিরল উদাহরণ। বাঙালি বীরের জাতি। এ জাতি হারতে জানে না, তাই প্রমাণ হলো নয় মাসের মহাকাব্যিক বীরত্বগাঁথায়। এ প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাদের জানার আগ্রহ অপার। আশার কথা এখনও প্রত্যয় যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক যোদ্ধা বেঁচে আছেন। সরাসরি তাদের মুখ থেকে যুদ্ধ জয়ের কথা শোনা এ প্রজন্মের কথা অনেক সৌভাগ্যের। তানিয়া সুলতানা সময়ের একজন সচেতন লেখক। তার লেখায় সব সময়ই উঠে আসে আমাদের অস্তিত্বের শেঁকড় সন্ধান। চমৎকার গল্প বলার এ কৌশলী লেখক পাঠককে নিয়ে যান গল্পের ভিতর, তার লেখা আপন পাঠ হয়ে ওঠে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরদের বীরত্ব গাঁথা নিয়ে লেখা তার অসাধারণ গ্রন্থ ‘বীরত্বগাঁথা’ বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য এক বিরল অভিজ্ঞতা। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী তানিয়া সুলতানা তুলে ধরেছেন সহজ সরল ভাষায়। পড়ে মনে হয় প্রত্যক্ষ অনুভূতির বয়ান। তানিয়া সুলতানা আমাকে জানিয়েছেন, এবার যে একশ’ পাঁচজন বীরের বীরত্বগাঁথা তিনি তুলে এনেছেন তারা প্রায় সবাই সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষ। জীবন বাজি রেখে রাখা লড়ে আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন, স্বাধীন দেশে কত অসহায় তারা। তানিয়া সুলতানা রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য অনেক অনগ্রসর স্থানে গেছেন, দেখেছেন দেশের জন্য লড়াকুরা এখন জীবন যুদ্ধেও হার মানতে চান না, অনেক পরশ্রেমের এই দলিল হয়ে থাকবে-আশা করা যায়। আর এই গুরুত্বপূর্ণ রচনার জন্য তানিয়া সুলতানার সকল ত্যাগ সার্থক হবে বলে আশা করি।