প্রথম গল্প জাতীয় দৈনিক সংবাদে ছেলেছিল ১৯৭৫ এর ডিসেম্বরে। তারপর দীর্ঘকাল লিখেছি। আমি জন্মেছিলাম অখন্ড রাজশাহী জেলার চাঁপাই নবাবগঞ্জের এক গ্রামে। ওখানেই থেকেছি ১৯৭০ খ্রি. পর্যন্ত। হালবলদের সাথে পরিচয় হয়েছিল প্রায় হাতে-কলমে। নবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর পাশ দিয়ে নওগাঁ জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এক বিশাল ভূখন্ড। ফাঁকা গ্রাম ও গাছগাছালি শরীরের দাড়ির সমপরিমাণ। বাকিটুকু কেবল জমি। তেপান্তর মাঠ। ওখানেই বাংলাদেশের বড় ধনভান্ডার। এই ধান ফলানো হাল ফাল বাথান ও কৃষক, এলাকার উপকথাবহুল জীবন ও জীবিকা নিয়েই আমার সকল লেখা। এর মাঝে আছে প্রেম, মমতা, সারল্য ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির সাথে মানুষের নিষ্ঠুরতা। সবই আমি আমার গদ্যে তুলে আনতে চেষ্টা করেছি। এর মাঝেই এসেছিল একাত্তর ও পরবর্তী ক্রান্তিকাল। এই গ্রন্থে যুদ্ধে যাবার সময় নভেলেটটি একাত্তর ও একাত্তর পরবর্তী একজন মুক্তিযোদ্ধার জীবন বিড়ম্বনা ও হারিয়ে যাওয়ার কাহিনী লিখিত হয়েছে। আমি খুব সততার সাথে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা জীবনকে এখানে লিপিবদ্ধ করেছি। কোথাও কল্পনার আশ্রয় নিই নি। আমি পরম সততায় আমার দেখা ও অনুভবে আঁকা সত্যকে তুলে ধরেছি। এই দুটি নভেলেট একসাথে মুদ্রণের কারণ হলো, একাত্তর থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বরেন্দ্রের মানুষের উপর মুক্তিযুদ্ধের ধারণা ও ফলাফল গণমানুষের ভেতরে কীভাবে ক্রিয়াশীল ছিল সেটার একটা বয়ান দেয়া। সফলতা ও ব্যর্থতার সকল দায় আমার। ঘটনাকে আমি বিকৃত করিনি। বিভ্রান্তিতেও ভুগিনি। আমার এই প্রচেষ্টা অনিন্দ্য প্রকাশ গ্রন্থ আকারে ছাপিয়ে আমাকে যে সাহায্য করলেন আমি তাদের কাছে ঋণী রইলাম।