প্রতিদিন সারা বিশ্বে অগণিত ঘটনা ঘটে। কেন মাত্র কিছুসংখ্যক ঘটনা সংবাদে পরিণত হয়? কেন জনগণ এসব ঘটনা জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠে, আবার কোনো কোনো ঘটনা একেবারেই উপেক্ষিত থেকে যায়? এসব ঘটনার সংবাদমূল্য নির্ধারণ করে কে? অন্তর্নিহিত সত্তাগতভাবেই এসব ঘটনার মধ্যে কোনো কোনোটি কি সংবাদে পরিণত হয় আর কোনোটি হয় না? কিংবা সংবাদ কাহিনী উপস্থাপনের প্রক্রিয়ায় এর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দাবি করে? এসব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে কীভাবে বৈচিত্র্যময় সংবাদ কাহিনী ও ছবি উপস্থাপন করা হয়; এই উপস্থাপনা কীভাবে পরবর্তী ঘটনা পরম্পরা ও এর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণকে প্রভাবিত করে? এসব আলাপ-আলোচনা কে বা কেন নিয়ন্ত্রণ করে? এসব সংবাদ কাহিনীর উপস্থাপনা ও পুনরুৎপাদন কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কথা বলে না দুর্বল জনগোষ্ঠীর স্বার্থ নিশ্চিত করে? এসব সংবাদ কাহিনী কি এই জগতে আমাদের অবস্থানকে সংজ্ঞায়িত করে, নির্মাণ করে আমাদের পরিচয় সত্তা কিংবা অন্য দেশ ও জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ও মাত্রা ও ধরণ? সাংবাদিকতা ও সংবাদ শিল্পকে সম্যকভাবে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে এ রকম হাজারও প্রশ্ন আমাদের বোধ ও চৈতন্যে ক্রিয়া করে। এই গ্রন্থে এসব প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই সামগ্রিক বক্তব্য হাজির করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ উত্তর দেওয়ার বদলে সার্বিক উপলব্ধি, আলোচনা, বিশ্লেষণ ও অন্তর্দৃষ্টিকে উস্কে দেওয়ার প্রয়াস চালানো হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম রাজশাহীতে অবস্থিত বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজম, কমিউনিকেশন ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক। শিক্ষকতায় আসার আগে তিনি পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন বাংলাদেশর বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’, ‘ঢাকা ট্রিবিউন' ও ‘ডেইলি সান' এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন'। তিনি ২০১৪ সালে ভারতের এশিয়ান কলেজ অব জার্নালিজম, চেন্নাই, থেকে নিউ মিডিয়ার উপর পড়াশুনা সম্পন্ন করেছেন। সম্প্রতি তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন ডাইভারসিটি অ্যান্ড ইনকুশন স্টাডিজের উপর সার্টিফিকেট কোর্স। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযােগযােগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও শতকত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। তার পড়ালেখার প্রাথমিক পাঠ শুরু হয় হাজারবিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে; মাধ্যমিক সম্পন্ন হয় শিবগঞ্জ সরকারি মডেল হাই স্কুলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক রাজশাহী নিউ গভ: ডিগ্রি কলেজ থেকে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলাের মধ্যে রয়েছে--বাংলাদেশে সাংবাদিকতা: সংবাদ লেখা, শৈলি ও কাঠামাে ও Digital Divide Among the University Students in Bangladesh। তাঁর প্রকাশিত অনুবাদ গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে উন্নয়ন ভাবনা (রবার্ট চ্যাম্বার্সের। আইডিয়াজ ফর ডেভেলপমেন্ট গ্রন্থটির অনুবাদ) ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উৎস ১৯৭২১৯৯০। এছাড়াও প্রকাশিত অন্যান্য অনুবাদের মধ্যে রয়েছে নয়া তথ্য-প্রযুক্তি ও গণতন্ত্র, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম: বাস্তবতা ও অতিকথন। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন একাডেমকি জার্নালে তার বেশ কিছুসংখ্যক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে পঠিত হয়েছে প্রবন্ধ। আমিনুল ইসলামের একাডেমিক আগ্রহের বিষয় ও গবেষণাক্ষেত্র হচ্ছে-তত্ত্বীয় যােগাযােগ, সােশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস, কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস, উন্নয়ন যােগাযােগ, আন্তসাংস্কৃতিক যােগাযােগ এবং তথ্য-যােগাযােগ প্রযুক্তির সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত।