গল্পক্রমের পটভূমি ‘নিশিযাত্রা’ গল্পে পঙ্গু মেয়ের জীবন চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ। একসময় স্বপ্নের মতো তাকে ধরা দেয় কাক্সিক্ষত ভালোবাসা, স্বামী-সংসার। কিন্তু বাস্তবতায় একজন বিকলাঙ্গ নারীর স্বপ্নসাধ কী করে বুমেরাং হয় তারই প্রতিচিত্র। ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার অনেক কিশোরীই জানতে পারে না আসলে কী তার অপরাধ? তবুও মুখ বুঁজে এরা সয়ে যায় যতসব নিপীড়ন। এ বিষয়টিই উঠে এসেছে ‘খসে পড়া চাঁদ’ গল্পে।
দেখা-অদেখার আশাজাগানিয়া এ দূরত্বে লুক্কায়িত সুখ-দুঃখের উৎকৃষ্ট উদাহরণ ‘ছায়ামানবী’ গল্পটি। এছাড়া ‘সোনালি স্বপ্নের মেরুন কান্নারা’, ‘উড়ে যায় মেঘ’ ও ‘ভাঙনের শব্দ’ গল্পেও ধরা পড়েছে অধরা প্রেম, জীবন এবং জগতের নানা বিষয় ও অনুভূতি। লেখক ছোট পরিসরে গভীর থেকে গভীরতায় নিয়ে গেছেন গল্পের আবহকে। তিনি বিষয়বস্তু ও শিরোনামে নান্দনিকতা এনে সাবলীলভাবে সব পাঠকের উপযুক্ত করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। গল্পের একেকটি চরিত্র একেক রূপের, ঢঙের, বৈশিষ্ট্যের, বয়সের, রুচির, মননের, ঐশ্বর্যের ও সমাজের।
লেখকের সংক্ষিপ্ত জীবনী: তারুণ্যদীপ্ত মাজহার মান্না শূন্য দশকের অন্যতম কবি ও লেখক। জন্ম: ১৯৮৫ সালের ১ জানুয়ারি। পিতা অধ্যক্ষ এ.এস.এম ওয়াহিদ খান ও মাতা ফাতেমা আক্তার। কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে ২০০২ সাল থেকে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত। পাশাপাশি সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘অনুশীলন’ সম্পাদনা করেন। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থ ‘নিঃসঙ্গ লাটাই’ (কবিতা) ২০১০ সালে একুশে বইমেলায় ঢাকা মুক্তচিন্তা থেকে প্রকাশ হয়। ‘ছায়ামানবী’ (গল্পগ্রন্থ) ২০১৩ সালে একুশে বইমেলায় প্রতিভা প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্যের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে ‘লেখো গল্প হও নাট্যকার’ প্রতিযোগিতায় বৈশাখী টেলিভিশনের সেরা পুরস্কার লাভ। লেখকের নির্বাচিত গল্পের নাটক ‘নিশিযাত্রা’ ওই বছরের ঈদুল ফিতরের চতুর্থ দিন রাত সাড়ে ১০টায় বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচার হয়। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ও শুদ্ধ সংস্কৃতির ধারক মাজহার মান্না পেশাগত জীবনে দৈনিক জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা (কিশোরগঞ্জ জেলা) কর্মরত আছেন। তিনি কর্মে বিশ্বাসী। ভালোবাসেন দেশ ও দেশের মানুষকে।