সূচিপত্র সন্ত্রাস বা সহিংসতা এমন জিনিস যা র যৌক্তিকতা তার নিজের মধ্যে নিহিত নেই। শুধু সন্তাসের জন্য একমাত্র মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত ছাড়া অন্য কেউ করে না। সন্ত্রাস সব সময়েই কোন না কোন অন্য অপরাধের সাথে সম্পর্কিত। বাঙালাদেশে এখন আমরা যে সন্ত্রাস দেখছি এটা ১৯৭২ সাল থেকেই দুর্নীতির সাথে সম্পর্কিত হয়ে ব্যাপকতা ও বিচিত্র প্রাপ্ত হয়েছে। এখানে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস যে সমান্তরালভাবে ও একই সময়ে হয়ে এসেছে এবং একই হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, এটা এই পর্যায়ে বাঙালাদেশের ঘটনাবলীর দিকে তাকালেই দেখা যায়। কাজেই এই সংকলন গ্রন্থে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দুই ভাগে বিভক্ত করে রচনাগুলিকে সাজানো হয়েছে এ কারণে নয় যে, এ দুটি পরস্পর থেকে বিছিন্ন ব্যাপার, উপরন্ত এই বিভাগের মধ্য দিয়েই দেখানোর চেষ্টা হয়েছে যে, বাঙালাদেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস কিভাবে পরস্পরের সাথে এক অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্রে প্রথিত। দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিষয়ে সাধারণভাবে কিছু কথা বললেই এ দুই সম্পর্কে ধারাণা স্পষ্ট হয় না। এর জন্য প্রয়োজন ও সবের সুনির্দিষ্ট দৃষ্টান্তের সাথে পরিচিত হওয়া। এই পরিচিতির চেষ্টাই এখানে করা হয়েছে। বইটিতে বানানের কিছু সমস্যা থেকেই গেল। বিশেষত সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রেই যেখানে দেয়া দরকার, সেখানে দেয়া গেল না। এই সংকলনটি প্রকাশের জন্য জাগৃতি প্রকাশী ও স্নেহভাজন ফয়সল আরেফিন দীপনকে ধন্যবাদ বদরুদ্দীন উমর
বদরুদ্দীন উমরের জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিম বাঙলার বর্ধমান শহরে। মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, রাজনীতিবিদ, প্রাবন্ধিক ও ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি বাঙলাদেশে সুপরিচিত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ. পাশ করার আগেই ১৯৫৪ সালে দর্শন বিভাগে অস্থায়ীভাবে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৫ সালে এম. এ. পাশ করার পর ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি এই তিন বিষয়ে অনার্স ডিগ্ৰী অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগেরও তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা। ষাটের দশকে প্রকাশিত তাঁর তিনটি বই সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৬), সংস্কৃতির সংকট (১৯৬৭) ও সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৯) তত্ত্বকালে বাঙালী জাতীয়তাবাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময় পাকিস্তান সরকারের সাথে তাঁর বিরোধ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এবং তিনি নিজেই ১৯৬৮ সালে অধ্যাপনার কাজে ইস্তফা দিয়ে সরাসরি রাজনীতি ও সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে নিজেকে নিয়োজিত করেন।