ফ্ল্যাপে লিখা কথা সাদনাম বলল, ‘জিদনি, তোমার বন্ধু পিটপিটকে ডাকো । আসতে বলো সবার সামনে।’ লাজুক ভঙ্গিতে জিদনিবলল, ‘পিটপিটকে ডাকা যা্বে না এখানে। যেতে হবে তার কাছে, ব্যালকনিতে।’
‘সেকি, ব্যালকনিতে একা কী করছে পিটপিট,’ প্রশ্ন করল ,রুহানি। ‘চলো সবাই। আগে ব্যালকনিতে যাই। যেলেই বুঝবে কি করছে সে।’ জিদনির কথা শুনে এগিয়ে গেল পুরো দল। ব্যালকনিতে এসে অ্যাকুরিয়ামের দিকে তাকিয়ে জিদনি বলল, ‘ওই যে দেখো, দুই সারী সখিমাছের মাঝখানে লেজ নাড়ছে রঙিন মাছটি।’
রুহানি বলল, হ্যাঁ’ দেখলাম ।কিন্তু ওটা তো মাছ তোমার বন্ধ পিটপিট কোথায়, যে তোমাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে উৎসাহ দিয়েছে গাছ লাগাতে পরামর্শ দিয়েছে। ‘
‘ও-ই পিটপিট! নেত্রকোণার সাতপাই গ্রামের বড় পুকুরের মাছদের রাজার একমাত্র মেয়ে! আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।’
জিদনির কথা শুনে একযোগে সবার চোখ উঠে গেল কপালে। জীবনে এমন কেউ বন্ধু হতে পারে, এরকম কথা তারা কখনোই শোনেনি। ঘোর লাগা দশা থেকে নিজেকে উদ্ধার করে রুহানি বলল, ‘এটা কি রূপকথার গল্প? আমাদেরকে কি গল্প শোনাচ্ছ ,জিদনি?
‘না, গল্প শোনাচ্ছি না। আমরা সবাই শিশু। শিশুরা সরল । সুন্দর। সরল আর সুন্দর চোখ নিয়ে সরাসরি তাকাও পিটপিটের চোখের দিকে। মন সরল হলে, শুদ্ধ হলে শুনতে পাবে পিটপিটের কথা । পিটপিটের দিকে তাকাও আনন্দ-ভরা চোখে।’
‘তোমাদের সবার জন্য আদর, ‘পিটপিটের কথা স্পষ্ট শুনতে পেল সবাই। আর শোনার সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠল, ‘হ্যাঁ’ আমরা শুনতে পাচ্ছি!’ পিটপিটের কথা শুনতে পাচ্ছি!’
তিনি একদিকে কথাসাহিত্যিক, অন্যদিকে মনোশিক্ষাবিদ। ২০১৮ সালে কথাসাহিত্যে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। জাপানের ১২তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইকিয়াট্রির ফেলোশিপ প্রোগ্রামে নির্বাচিত হন বিশ্বের প্রথম সেরা ফেলো। জন্ম ১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি সাগরকন্যা সন্দ্বীপে। এমবিবিএস করেছেন সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মাসিক ’শব্দঘর’র সম্পাদক এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএমএইচ)-এর একাডেমিক পরিচালক। ২০১২ সালে তাঁর মনস্তত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থ ‘মানব মনের উদ্বেগ ও বিষন্নতা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য করা হয়।