ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা জীবন এক বহতা নদী। কর্ণফুলীর তীরে জন্ম এক জীবনের। জীবনের সে নদী সময়ের স্রোতে মিশে এঁকে-বেঁকে বড় হয়েছে স্ব-নির্মাণে। সায়ন এমনই এক জীবনের নদী। ব্রিটিশের রাজত্বে জন্ম হওয়া জীবনে এই নদী দেখেছে গোরাদের শাসন আর দেখেছে পাক-হানাদারের শৃঙ্খল-বেড়ি। দেখেছে সময়ের সেই শেষ্ঠ দিনগুলি। অগ্নিঝরা মুক্তিযুদ্ধের মহান দিন। দেখেছে পঁচাত্তরের পট-পরিবর্তন আর একুশ শতকের স্বর্ণ-তোরণ। এরই মাঝে জীবনের সে নদীর কল্লোলে যোগ হয়েছে পাখির কল-কাকলী। সংগ্রামে শুরু যে জীবনের, সংগ্রামেই সে জীবনের নদীকে উৎস হতে মোহনায় মিলতে দেখা। জীবনের সূর্যান্তে অন্তগামী আলোর শেষ রশ্মিপাতে জীবনের স্রোতের ইহলৌকিক সমাপ্তিই ফুটে উঠেছে সায়ানালোকে এক জীবনের সন্ধ্যায়। ভূমিকা জীবনের সংগ্রামে স্ব-নির্মিত এক বিজয়ী যোদ্ধা সায়ন। কৈশোর হতে জীবনের সকল রণে জয়ী সায়ন রোপন করেছে সুন্দরের আনন্দ-দ্রত। সাদা মানের আলোর মানুষ সায়ানের জীবনকে কাছ থেকে স্বপ্নে-বাস্তবে দেখে দেখে বেড়ে উঠেছি আমি। বৃটিশ রাজের ঔপনিবেশিক শাসন, বার্মার রণমুখর প্রবাস-জীবন, পশ্চিম পাকিস্তানীদের দুঃশাসন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অনির্বাণ দীপ্তি আর জাতির জনকের করুণ মৃত্যুর বেদনা সায়নের জীবনে জীবন্ত হয়ে আছে পটুয়ার পটে আঁকা ছবি হয়ে। একুশ শতকের নতুন অহনায়, ভোরের প্রথম আলোয় সায়ন দেখেছে বাঙালির অগ্রগতির স্বর্ণতোরণ। সায়নের জীবনের আলেখ্য জুড়ে সমাপতিত হয়ে আছে লেখকের বাবার জীবনের দুঃশ্বাস। একজন লেখক হিসেবে বাবার জীবনকে অধ্যয়ন করে একটি মানবিক উপন্যাসের স্বাদ মিলেছে। সায়নালোকে এক জীবনের সন্ধ্যায় উপন্যাসখানি সেই স্বাদকে সবার মাঝে বিতরণের এক মননশীল প্রয়াস। বাবার ইহলৌকিক জীবনের দীপাবসানেও কর্ম ও সংগ্রাম-ঋদ্ধ শিখার ভাস্বর প্রভায় আলোকিত হোক প্রতিটি নিরালোক সন্ধ্যা…… তারই প্রয়াসে বিনম্র এ নিবেদন। বিনত লেখক