গত বছরের শুরুতে ‘আউটসোর্সিং: শুরুটা যেভাবে’ শিরোনামে আমার এই লেখাগুলো প্রথম আলোর কম্পিউটার প্রতিদিন বিভাগে ধারাবাহিক ভাবে ছাপা হয়েছিল। তখন বিপুল পরিমাণ পাঠকের সাড়া পেয়েছিলাম। অনেক পাঠক অনুরোধ করেছিল লেখাগুলো বই আকারে বের করার জন্য। কিন্তু সময় স্বল্পতার জন্য তখন আর বই বের করা হলো না। তারপর থেকেই প্রস্তুতি শুরু। তার সাথে নতুন আরও অনেক কিছু যোগ করে এবং আরও বিস্তারিত ভাবে এই বইটি লেখার চেষ্টা করেছি। এই বইটি পড়ে জানতে পারবেন আউটসোর্সিং শুরু করতে হবে কীভাবে, কোথায় কাজ পাওয়া যাবে, কোন কাজের কী যোগ্যতা লাগে, কীভাবে ওডেস্কে অ্যাকাউন্ট খুলবেন, কীভাবে জবে আবেদন করবেন, ইন্টারভিউ হয় কীভাবে, অর্থ উত্তোলন করবেন কীভাবে, কীভাবে কোম্পানি দিবেন, কোম্পানির পেমেন্ট মেথড ভেরিফাই করবেন, কনট্রাকটরকে হায়ার করবেন কীভাবে, কনট্রাকটরকে পেমেন্ট দিবেন কোথায় থেকে, সমস্যার সমাধান পাবেন কোথায়, সহজে কাজ পাওয়ার কিছু টিপস, ফ্রিল্যান্সিং সাইট চিনবার উপায় এবং কয়েকজন ফ্রিল্যান্সারের সফলতার গল্প।
ভূমিকা আউটসোর্সিং শব্দটি হয়তো শুনেছেন। আউটসোর্সিং করে অনেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে এ কথাও হয়তো শুনেছেন। কিন্তু বিষয়টি কী, কীভাবে, কী করতে হয় এসব কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কারও কাছে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই, আউটসোর্সিং কী জিনিস? এর মাধ্যমে নাকি মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা যায়?’ আপনার সে ভাই উত্তর দিলেন, ‘কেউ কেউ এর চেয়েও বেশি ইনকাম করেন। আপনি কম্পিউটারের কী কী জানেন?’ আপনি উত্তর দিলেন, ‘আমি তেমন কিছুই জানি না। এমএস ওয়ার্ড জানি, ফেসবুকে আমার একটা অ্যাকাউন্ট আছে, কম্পিউটারের প্রাথমিক জ্ঞান আছে এই আর কি?’ আপনার সে ভাই জানালেন, ‘আপনি কি মনে করেছেন ডলার ইনকাম করা এতোই সোজা? এখানে সারা বিশ্বের প্রোগ্রামারদের সাথে কম্পিটিশন দিয়ে জবে বিড করে কাজ পেতে হয়। আপনি যতটা সহজ ভাবছেন ততটা সহজ না।’ এ কথা শুনে আউটসোর্সিংয়ের প্রতি আপনার আগ্রহই নষ্ট হয়ে গেল, স্বপ্নটাও মরে গেল। আপনার ওই ভাই যদিও সত্যি কথাই বলেছেন তবু আপনার প্রশ্নের উত্তর এমনও হতে পারত, ‘আপনি কোনো আউটসোর্সিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে দেখতে পারেন। ওখানে ফেসবুকের বেশ কিছু কাজ পাওয়া যায়। যেমন ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া, ফেসবুকের ফ্যান পেইজে লাইক সংগ্রহ করে দেওয়া, ডেটা এন্ট্রিরও অনেক কাজ আছে। আপনি অল্প রেটে আবেদন করলে সহজেই কাজ পেয়ে যেতে পারেন। আপনি হয়তো শুরুতে বেশি ইনকাম করতে পারবেন না, তবে চেষ্টা চালিয়ে গেলে ধীরে ধীরে আপনার ইনকাম বাড়বে। তখন আপনি নিজেই বুঝে যাবেন কীভাবে, কী করতে হবে?’ এ ধরনের উত্তর শুনে আপনি অনেক উৎসাহিত হবেন। এই বইয়ে আমি যতটুকু সম্ভব আউটসোর্সিং বিষয়টিকে সহজভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। বইটি পড়ে যদি পাঠকেরা উপকৃত হয় তাহলেই আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। -মো. আমিনুর রহমান
সূচিপত্র ১. আউটসোর্সিং ২. যে ধরনের কাজ পাওয়া যায় ৩. কোন কাজের কী যোগ্যতা? ৪. কাজ পাবেন যেখানে ৫. কীভাবে আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খুলবেন? ৬. কীভাবে জব খুঁজবেন? ৭. কীভাবে জবে আবেদন করবেন? ৮. ইন্টারভিউ নেয় কীভাবে? ৯. কীভাবে জব করবেন? ১০. কীভাবে অর্থ উত্তোলন করবেন? ১১. সমস্যার সমাধান পাবেন যেখানে ১২. সহজে কাজ পাওয়ার কিছু টিপস ১৩. ফ্রিল্যান্সিং সাইট চেনার উপায় ১৪. আমার প্রথম কাজ পাওয়া ১৫. একটা ল্যাপটপের জন্য ১৬. সব আগ্রহ অচিরেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ১৭. ভালো একটা ফিডব্যাক পাওয়ার মজাই আলাদা ১৮. এক ডলারের হাসি ১৯. আমি আউটসোর্সিং শুরু করি যেভাবে ২০. ডলার আয় স্বপ্ন নয়, বাস্তব ২১. আমার ফ্রিল্যান্সার হয়ে ওঠা
গত বছরের শুরুতে ‘আউটসোর্সিং: শুরুটা যেভাবে’ শিরোনামে লেখকের এই লেখাগুলো প্রথম আলোর কম্পিউটার প্রতিদিন বিভাগে ধারাবাহিক ভাবে ছাপা হয়েছিল। অনেকটা শখের বসেই লেখালেখি করেন। পেশা তাঁর আউটসোর্সিং। ভালোবাসেন সমরেশ মজুমদার এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই পড়তে, সিনেমা দেখতে, আনিসুল হকের লেখা নাটক দেখতে এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা কলাম পড়তে।
পেশায় ফ্রিল্যান্স ওয়েব প্রোগ্রামার মো. আমিনুর রহমান একজন প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক। বাংলায় আউটসোর্সিং বিষয়ে সেরা বইগুলোর অন্যতম দুটিই তাঁর লেখা, যেগুলো তরুণ ও প্রযুক্তিপ্রেমীদের মাঝে ব্যপক সাড়া ফেলেছে ইতোমধ্যেই। সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা করেছেন মো. আমিনুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়েই লেখালেখি শুরু করেন প্রথম আলোর ‘কম্পিউটার প্রতিদিন’ বিভাগে, যা আজও চালিয়ে যাচ্ছেন। ডক্টর প্রেসক্রিপশন নামে ডাক্তারদের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করে তাক লাগিয়ে দেন তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময়। এ নিয়ে ১৮-০৭-২০০৮ তারিখ দৈনিক প্রথম আলোর প্রজন্ম ডটকমে এবং ২১-০৭-২০০৮ তারিখ দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত হয় প্রতিবেদন। তাঁর তৈরি এই সফটওয়্যার আজও ব্যবহার করেন অনেক ডাক্তার। তাঁর উদ্ভাবনের পোকারা তখনই থেমে যায়নি। চতুর্থ বর্ষে পড়ার সময়ে এসে আবার তৈরি করেন এসএমএস দিয়ে টিকেট কাটার সফ্টওয়্যার। ২৩-১০-২০০৯ তারিখ প্রথম আলোর প্রজন্ম ডটকমে সেটি নিয়েও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার কয়েক মাস পরই মোবাইল কোম্পানিগুলো এই ধরনের একটি সফ্টওয়্যার তৈরি করে ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য ব্যবহার করা শুরু করে। অনেকটা শখের বসেই লেখালেখি করেন পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও আউটসোর্সের সাথে যুক্ত আমিনুর রহমান। মো. আমিনুর রহমান এর বই সমূহ-তে আউটসোর্সিং এর দিকনির্দেশনার পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে সফল ফ্রিল্যান্সারদের অনুপ্রেরণাদায়ক সব গল্পও। ২০১২ সালের শুরুতে ‘আউটসোর্সিং: শুরুটা যেভাবে’ শিরোনামে লেখকের বেশ কিছু লেখা প্রথম আলোর কম্পিউটার প্রতিদিন বিভাগে ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়েছিল। পাঠকদের ব্যাপক সাড়া ও অনুরোধে পরবর্তী বছরেই প্রকাশিত হয় মো. আমিনুর রহমান এর বই ‘আউটসোর্সিং: শুরুটা যেভাবে ও শুরু করার পর’। তারই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের বইমেলায় আসে তাঁর আউটসোর্সিং বিষয়ক সচিত্র ও দ্বিতীয় বই ‘আউটসোর্সিং ২ : কাজ শিখবেন যেভাবে’। মো. আমিনুর রহমান এর বই সমগ্র নতুন প্রজন্মের আউটসোর্সারদের জন্য অনুপ্রেরণা ও গাইডলাইন হিসেবে কাজ করছে।