ফ্ল্যাপে লিখা কথা উকিল মুন্সি মৈমনসিংহ গীতিকার পালাকার কবি দ্বিজ কানাই, মনসুর বয়াতি, কঙ্ক, দামোদর, রঘুসুতের উত্তরসুরি। সেইসব পালাগানের কাহিনির উৎসভূমি এবং ধনু নদীর সন্তান উকিল মুন্সি। সেই মানবীয় প্রেম, বিরহ ও প্রকৃতি এই মরমি সাধকের গানে নতুন ব্যঞ্জনায় মাত্রা পেয়েছে যেন। উকিলের গানে বিশেষ করে বিরহী ভাব আলাদা একটি ইমেজ সৃষ্টি করেছে। এই ভাব ও প্রেম অ্যধান্তসাধনকে ঘিরে। এই প্রেম সুন্দরের জন্য আরাধনার। এইসব চিরকালীন অনুষঙ্গ সত্ত্বেও মেধা ও প্রতিভার গুনে আঞ্চলিকতার গণ্ডি ছাড়িয়ে উকিলের গান যুগান্তরে-কালান্তরে এসেও শ্রোতাদের আকর্ষণ করে। উকিল মুন্সির পথ প্রেমের। সেই প্রেম দিনযাপনের সঙ্গে জীবিকার সঙ্গে ব্যপ্ত হয়ে ব্যক্তিবোধের সংকীর্ণ অনুভূতি ছাড়িয়ে সমষ্টি ও সামগ্রিকসত্ত্বায় জায়গা করে নেয়। শুধু ভাবের আতিশয্যে প্রেমের বাণীনির্ভর নয় উকিলের গান। তার গানে চিত্রকল্পের পর চিত্রকল্পে জল-হাওয়া-মাটির গন্ধ ও অভিজ্ঞানে আবহমান বাঙালির নাড়ির যোগ টের পাওয়া যায়।
অধরাকে ধরার জন্য, মিলনের জন্য ,এতটুকু শান্তির জন্য করুণ আকুতি ও হাহাকার উকিলের গানের তূরীয় ভাব। জীবাত্না-পরমাত্নার মধ্যে অভেদ্যসাধনকরণই সহজিয়া মরমি সাধাকদের ধ্যান-জ্ঞান। এই প্রেম প্রচলিত ধর্মনীতি, প্রথা ও বিশ্বাসের দিকে যায় না। এই প্রেম প্রকৃতির সঙ্গে ঐতিহ্যের , শিকড়ের সঙ্গে গাছের পাতার, জীবত্নার সঙ্গে পরমাত্নার অন্তর্নিহিত সত্যকে উপলব্ধির-সৌন্দর্যকে অবলোকনের।