ফ্ল্যাপে লিখা কথা চল্লিশ ছুঁয়েছে বয়স আমার, মেখলা ছুঁয়ে আছে আমার শরীর। শরীর মানে আমার ডান হাতটা বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে মেঘলা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার, রাতের অন্ধকার ভেদ করে বিরামহীন গতিতে ছুটে চলেছে গ্রীন লাইনের দ্রুতগামী বাস। বিশ-একুশ বছরের মেঘলা, চারুকলায় পড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার একটা নাটকের কস্টিউম সংক্রান্ত ব্যাপারে একবার আমি চারুকলায় যাই। সেখানেই মেঘলার সাথে পরিচয়, পরে ঘনিষ্ঠতা। সৌন্দর্য আর রূপ লাবণ্যে এক অপূর্ব রমণী মূর্তি। ঘুমন্ত অবস্থায় তার সমগ্র চৈতন্য দিয়ে পরম নির্ভরতায় জড়িয়ে আছে আমাকে। নির্মোহ, এক শীতল ভাবাবেগের ব্যাকুলতায় মুহূর্তের মধ্যেই মেঘলাকে আমি ভুলে যাই। আমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে বিরাজ করে তৃষা আর দিশা- আমার দুই মেয়ে, আল্পনা- আমার স্ত্রী অনিবার্য ভাবেই চলে আসে আমার কল্পনায়।’
‘সন্তান সন্ততির বন্ধন বড়ো আশ্চর্য রকমের। সারা পৃথিবী জুড়ে বোধকরি এই বন্ধনের কোনো আলাদা রকমফের নেই। এই সম্পর্কের কাছে সবকিছু তুচ্ছ। আর এ বন্ধনের মূলে আছে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্কের এক বিশাল পরিসর। তবুও মানুষ ভিন্ন পথে পা বাড়ায়। কখনো কখনো দাম্পত্য সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। আবার কিছু সম্পর্ক টিকে থাকে কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে। মাঝে মাঝে ভাবি, আমি সেই জোড়াতালির সংসারের একজন নই তো?’
‘বাঁধভাঙা আবেগে, ঘোরলাগা ভালোলাগায় মেঘলা মুহূর্তের মধ্যেই আমার কাছে চরম এবং পরম আরাধ্য হয়ে ওঠে। অসীমের সীমানায় দাঁড়িয়ে মেঘলাকে মনে হলো শত জনমের কাঙ্ক্ষিত প্রণয়ী। আমার সংস্কার আর মূল্যবোধ ক্রমেই শিথিল হয়ে আসে। সময়ের অনিবার্য আহ্বানে আমার চিত্তে জাগে সমুদ্রের উত্তালতা। মেঘলাকে দেখি। সেও আছে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায়। মেঘলার শাড়ির আঁচল খসে পড়ে। আমি অন্য এক মেঘলাকে দেখি। ঝড়ের বেগে আমার বুকের মধ্যে ঠাঁই করে নেয় মেঘলা ......