ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা ফুল, পুষ্প, প্রসূন-যে নামেই ডাকি না কেন ফুলের মাহাত্ম্যের কোনো হেরফের হয় না। সৌরভে-সৌন্দর্যে ফুল শুধু মানুষকেই নয়, বিহঙ্গ, প্রজাপতি, মধুমাছি সকলকেই আকর্ষণ করে। আমাদের প্রকৃতি এত বর্ণময়-সৌরভময় তো ফুলের কারণেই। সর্বোপরি ফুল কবির প্রিয় উপমা যেমন, তেমনি প্রকৃতিবিদ ও নিসর্গ সন্দর্শকদের কাছে ফুলের মর্যাদা অনবদ্য। মোকারম হোসেন বিশিষ্ট এবং সফল লেখক। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রকৃতি না চিনলে, ফুল, তরুলতার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে লেখকদের রচনায় অজ্ঞতার প্রকাশই বড় হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে প্রকৃতি সন্ধিৎসু লেখকদের তথ্যনির্ভর গ্রন্থ সব বিষয়ের লেখকদের জন্য পাঠ অনিবার্য। অসংখ্য প্রকৃতিবিষয়ক গ্রন্থের রচয়িতা মোকারম হোসেন এই গ্রন্থটি পড়ার নয়, দেখার। ছবি দেখে দেখে ফুল চেনার। শত ফুলের সচিত্র প্রামাণ্য এই অ্যালবামটি আমাদের জন্য একটি বড় প্রাপ্তিই বলব। বিশেষত ছয় ঋতুতে কত যে ফুল ফোটে, তা আমাদের অজ্ঞাত। এই গ্রন্থে বর্ণানুক্রমে সাজানো সে সব রঙবাহারি ফুলের চিত্রকথন। বইটি কবিদের জন্য যেমন জরুরি, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক গবেষক-শিক্ষার্থীদের জন্য তেমনি গাইড বইয়ের কাজ করবে। গ্রন্থে ব্যবহৃত সব ছবিই লেখক নিজে তুলেছেন। সঙ্গে আছে না, বৈজ্ঞানিক নাম আদিআবাস এবং বিস্তৃতিসহ সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। অ্যালবামটি ফুলপ্রেমীদের কাছে গ্রহণীয় হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
জন্ম মাতুলালয়ে, ৩০ অক্টোবর। বাবা : একেএম ফজলুল করিম, মা : মনোয়ারা বেগম। গ্রাম : লক্ষণপুর, পোস্ট : ভবানীজীবনপুর, উপজেলা : বেগমগঞ্জ, জেলা : নোয়াখালী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা। একযুগেরও বেশি সময় দৈনিক প্রথম আলোয় ‘প্রকৃতি’ কলামে লিখছেন। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৮। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের নদী, বর্ণমালায় বাংলাদেশ, বিশ্বের সেরা দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশের মেলা, ঘুরে আসি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ফুল ও ফল, জীবনের জন্য বৃক্ষ, বিপন্ন প্রজাতির খেরোখাতা, প্রকৃতি ও প্রাণসম্পদ (সম্পাদনা), বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, ঋতুর রঙে ফুলের শোভা, আমাদের সবুজ বন্ধুরা, ভোরের ফুল সন্ধ্যার পাখিরা, আমাদের পার্ক ও উদ্যান, ছয় রঙের বাংলাদেশ, বাংলার শত ফুল, জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার পুষ্প-বৃক্ষ ইত্যাদি। পরিবেশসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৩ সালে কাজী কাদের নওয়াজ স্বর্ণপদক, ১৪০৮ ও ১৪১০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১১ সালে এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। নেশা ছবি তোলা ও ভ্রমণ।