ফ্ল্যাপে লিখা কথা ফারসি সাহিত্য পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধতম সাহিত্য। খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই ফারসি ভাষায় সাহিত্য চর্চা বিভিন্ন আলামত পাওয়া যায়। মধ্যযুগে ফারসি সাহিত্য উৎকর্ষতার শীর্ষে পৌঁছে। এ যুগে আবুল কাসেম ফেরদৌসী ফারসি ভাষায় শাহ্নামা রচনা করে বিশ্বজোড়া ফারসি সাহিত্যে খ্যাতি ছড়ান।তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে এ সাহিত্যঙ্গনে ওমর খাইয়াম, ফরিদ উদ্দিন আত্তার, হাফেজ সিরাজী, জালাল উদ্দিন রুমী প্রমুখের ন্যায় বিশ্ব -বিশ্রুত খ্যাতিমান কবিদের আগমন ঘটে। ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলা ভাষা-ভাষী সাহিত্যে প্রেমীরাও ফারসি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। এর ফলে এঁদের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মই বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়ে বিপুল সমাদৃত হয়। তবে আধুনিক যুগে, বিশেষ করে উনিশ শতক, বিশ শতকে ফারসি সাহিত্যে এঁদের মতো কালজয়ী প্রতিভার আবির্ভাব না ঘটলেও ফারসি সাহিত্যের গদ্য শাখায় উপন্যাস, নাটক ও ছোটগল্পের মতো নবতর শাখার উদ্ভব ঘটেছে এবং এমন ক’জন শক্তিশালী কথাসাহিতিক্যের আবির্ভাব ঘটেছে, যাঁরা শিল্পসম্পন্ন ও শক্তিশালী বাণীসম্বলিত জীবন-ঘনিষ্ঠ উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনা করেছেন, যাতে সমকালীন ইরানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও চলমান জীবনের বাস্তব প্রতিচিত্র সুস্পষ্টরূপে চিত্রিত হয়েছে।
কালের পরিক্রমণে বর্তমানে ফারসি উপন্যাস শতবর্ষেরও অধিক সময় পার করেছে। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ফারসি ঔপন্যাসিক গণ স্বযত্নে তুলে এনেছেন আধুনিক ইরানের সমাজ-বাস্তবতার বর্ণিল চিত্র, যেখানে তাঁরা জীবনের জটিল কুটিল ও কুৎসিত অন্ধকার দিকগুলোর প্রতিও যেমন আলোকপাত করেছেন তেমনি গভীর মানবিক মমতায় ভাস্বর হয়ে উঠেছে তাঁদের উপন্যাসের ক্যানভাস। সূচনাকাল থেকে ২০০০ খ্রিস্টব্দ পর্যন্ত সময়কালে ফারসি উপন্যাস অঙ্গনে আর্বিভূত এমনি ৫১ জন খ্যাতনামা ফারসি ঔপন্যাসিকের উপন্যাস এ গ্রন্থে আলোচিত ও বিশ্লেষিত হয়েছে ।