ফ্ল্যাপে লিখা কথা আশেপাশে চোখ ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখে পড়ল, নয় দশ বছরের দুটি অবুঝ শিশু, এই অলস দুপুরের ছুতোয় প্রকৃতির অকৃপণ দান, ঐ বিশাল বৃক্ষের ঘন ছায়ায় নিশ্চিন্তে নির্ভেজাল নিদ্রায় মগ্ন। একজনের মাথায় কাছে একটি বাহারি চকোলেটের পলিথিন আর অন্য শিশুটি সিগারেটের একটি বাক্স বুকে নিয়ে তা দু’হাতে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। ঢাকা শহরে এ কাতীয় ঠিকানাবিহীন শিশুর সংখ্যা যে কত, তা বোধ করি কেউ আদমশুমারী করে গণনা করার প্রয়োজন বোধ করেন না। যাদের আবাস নামক স্থান হিসেবে সর্বকালের রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীরা করে দিয়েছেন রমনা পার্ক, বলদা গার্ডেনের মত ছায়াযুক্ত পার্ক। খুলে দিয়েছেন বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট আর কমলাপুরের মত বিশাল রেল জংশন। সমস্ত দিন কাজ করে, সরকারি জায়গায় নিদ্রা যায়, আবারও ট্যাক্সবিহীন। এটাইতো তাদের মস্ত বড় অপরাধ। সরকারকে ঠকিয়ে এত বড় রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া কি উচিত হচ্ছে ঐ ছিন্নমূল অবাঞ্চিত জারজ টোকাইদের? একে দিন দুপুরে সিঁদ কেটে চুরি ছাড়া আর কিই-বা বলা যেতে পারে। আসলে বুঝি না, এ কেমন মরার দেশ, যে দেশের শহরের কোন নিয়মানুবর্তিতা নেই, রাজধানীর অভ্যন্ত্মরে কোন কাজে গেলে কয়েক ঘন্টা জ্যামে আটকা পরে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। যে দেশের শিশুরা এখনও ডাষ্টবিন থেকে কুকুরের খাবারে ভাগ বসায়, আর ক্ষুধার্ত থাকতে হয় রাস্তার কুকুরগুলোকে। আমার মনে হয় এর জন্য সংসদে একটি আইন পাশ হওয়া দরকার। যে কুকুরের খাবারে কখনও এই অবাঞ্চিত শিশুরা হাত বাড়াতে পারবে না, আর ভুলেও যদি কভু এই দুঃসাহস দেখায় তবে নিশ্চিত যাবজ্জীবন নতুবা ফাঁসি।