বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বহু সমস্যার সমন্বিত একটা ফলাফল বলা যেতে পারে।এদেশের প্রধান বড় দুটি দল হলো আওয়ামী লীগ এবং বি এন পি... এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কিংবা এক এগারোতে দল দুটোকে একই সুরে কথা বলতে দেখা গেলেও তাদের উভয়ের মতাদর্শের মাঝে রয়েছে বিস্তর তফাৎ। ব্রি জে (অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ২০০৭ সালে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। এ বিরাট দায়িত্ব গ্রহন করার পূর্বে হাজার বার ভেবে নিতে হয় যে, সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবো কি-না,না কি পূর্বোক্ত বিভিন্ন কমিশনের মতো মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে সরে পরতে হবে! এত ঝঞ্জাটের ভেতরেও সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে দুপুরে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জেআর মোদাচ্ছের হোসেন। নতুন এক জীবনের যাত্রা সেদিন থেকে শুরু হয়ে থেমেছিলো ঠিক তার পাঁচ বছর পরে। বইটিতে নির্বাচন কমিশনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হবার দরুন যেসকল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন লেখক তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরা হয়েছে। (দেড় হাজার পাতার অধিক ডায়েরি থেকে কেটে ছেঁটে সংক্ষিপ্ত করে বইয়ে রূপদান করা হয়েছে) ২০০৭-১২ সাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক নির্বাচন আয়োজনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলো এই কমিশন। যার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন ড. এটিএম শামসুল হুদা, মোহাম্মদ ছহুল হুসাইন এবং লেখক। বিএনপি'র হাত থেকে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পরের উত্তাল সময়গুলো থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশনে লেখকের যোগদান, প্রথম ছবিসহ ভোটারদের লিস্ট, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপচারিতা, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা আলাপচারিতা কথা বিস্তারিত ভাবে এখানে দেখতে পাবো।তবে, ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিলো এসবের ভেতরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একে তো জাতীয় সংসদ নির্বাচন তার সাথে তত্বাবধায়ক সরকারের হাত থেকে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতার স্থানান্তর। আওয়ামীলীগের বিরাট আকারে জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া কিংবা বিএনপির হেরে যাওয়ার কিছু কারণ ব্যাখ্যা করা আছে বইটিতে। দীর্ঘ এই যাত্রাপথের সমাপ্তি টানতে হয়েছিলো ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০১২ সনে।অপর দুই সহযোগীর ১০ দিন পরে, কারণ তারা উভয়েই ১০ দিন পূর্বে যোগদান করেছিলেন। - গণতান্ত্রিক দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নির্বাচন। আর এই নির্বাচন সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে 'নির্বাচন কমিশনে পাঁচ বছর'।
Brigedier J.M. Sakaoat Hosen Ret. ১৯৪৮ সনের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সনে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-৮১ সনে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। এ পর্যন্ত তার তেইশটি বহুল পঠিত বই প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দেশী-বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে। ২০০৮ সনের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের পাঁচ হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা।