ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা শিশুমানস, শিশুজগত, শিশুকল্পনাকে ধারণ করে এগারোটি গল্প নিয়ে শিশুদের জন্য লেখা দীপু মাহমুদের গল্পগ্রন্থ ‘বাঘের মন খারাপ।’ এইসব গল্প নিছক রূপকথা নয়, তারও অতিরিক্ত বিবিধ উপাদান এখানে আছে। কল্পনার পাখা মেলে সবগুলো কাহিনিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে পশু, পাখি, পতঙ্গ, মাছ, গাছ ও ফুল নিজেদের কথোপকথনে। কল্পনা আর বাস্তবের মিশেলে লেখা গল্পগুলো শুধু অর্থহীন কল্পনার ফানুস নয়, গল্পের চরিত্রগুলো, সেই পশু, পাখি, পতঙ্গ, মাছ, গাছ, ফুল সবাই বাস্তব পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ, অনুভূতি ও হাসি-আনন্দ-দুঃখ-কান্নার মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছে মানবজীবনেরই শরিক। পৌষালি বনের বাঘ তেপান্তরের বনের রাজা হয়ে যায় কূট কৌশলে। নিজ থাবা চাটতে শিয়ালকে বলে, ‘শুনলাম তুমি নাকি এই বনে ইউনিভার্সিটি খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছ?’ শিয়াল বলে, ‘অনেকদিন পাঠশালা চলালাম। কুমিরের ছানাদের তো পড়ালাম। এবার ভাবছি গাধা, গরু, ছাগল, ভেড়া-এদর বাচ্চাদের পড়াব। তাই ইউনিভার্সিটি খোলা।’ তারপর একদিন সেই অত্যাচারি বাঘ-রাজা আর তার নিষ্ঠুর প্রধান সেনাপতি নেকড়ে একসঙ্গে হয় কুপোকাত। মুক্তির আনন্দে রাতের অন্ধকারে জেগে ওঠে বন। এমনই নানা রসের সমন্বয়ে এগারোটি গল্পের নিপুন বুনন ‘বাঘের মন খারাপ’।
দীপু মাহমুদ। জন্ম ২৫ মে ১৯৬৫, নানাবাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার গ্রাগপুর গ্রামে। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে দাদাবাড়ি হাটবোয়ালিয়া গ্রামে। বেড়ে ওঠা স্নেহময়ী, কালিশংকরপুর, কুষ্টিয়া। পিতা প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল হুদা, মা হামিদা বেগম। পড়াশোনা করেছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতায়। আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সায়েন্স ফিকশন সাহিত্য পুরস্কার, এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার, শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী স্বর্ণপদক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্বর্ণপদক, আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার, আবু হাসান শাহীন স্মৃতি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কবি জীবনানন্দ দাশ স্মৃতিপদকসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন সম্মাননা।