ফ্ল্যাপে লিখা কথা হেলে-দুলে চলা হাতি কখনও কখনও ভয়ংকর হয়ে উঠে। এই শিকার কাহিনি সংকলনটিতে তেমনই কিছু ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। সুলেখক ইশতিয়াক হাসানের প্রাঞ্জল রূপান্তরের গুণে বইটি এক নাগাড়ে পড়ে শেষ করা যায়। হাতি নিয়ে রোমহর্ষক কাহিনি ছাড়াও বাঘ, মোষ, সিংহ আর হিংস্র কুকুরকে নিয়ে যে অভিজ্ঞতা লেখকের হয়েছিল , সেসবের ঝরঝরে রূপান্তর উপহার দিয়েছেন ইশতিয়াক। এখানে সেয়ানে সেয়ানে’ নামের কাহিনি থেকে সামান্য অংশ তুলে দিচ্ছি: জার্মান অধিকৃত পূর্ব আফ্রিকায় লুয়েগু নদীর তীরে সুলতান লিনডুকার গ্রাম। ১৯০৮ সালে এখানে একটা হাতির সঙ্গে রোমাঞ্চকর এক অ্যাডভেঞ্চারে জড়িয়ে পড়লাম। দিনভর পাঁচটা বিশালদেহী মদ্দা হাতির একটা পালকে নাছোড়বান্দার মত অনুসরণ করেছি। কখনও কাঁটা ঝোপে-ভরা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে। কখনও বা খুব সতর্কতার সঙ্গে পায়ের ছাপ ধরে এগিয়েছি দীঘল নলখাগড়ার বনের ভিতর দিয়ে। লুয়েগু নদীর একটি শুকেয় যাওয়া শাখা-খালের গতিপথ নির্দেশ করছে এই নলখাগড়ার বন। কোনও রকম দুর্ঘটনা ছাড়াই দলের চারটে হাতিকে শুইয়ে দিলাম। মোটামুটি খোলা একটা জায়গা দিয়ে পাগলের মত ছুটে পালাচ্ছিল দলের শেষ হাতিটা।হাতিটার হৃদপিন্ডের কোথাও লাগল আমার গুলি। সঙ্গে সঙ্গে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় শরীরটা ঘুরিয়ে আমার দিকে ছুটে এল। চলমান পাহাড়টা বিশ কদমের মধ্যে চলে আসা পর্যন্ত শান্তভাবে অপেক্ষা করলাম। তারপর বিনা দ্বিধায় বন্দুকের দ্বিতীয় ব্যারেলটা খালি করলাম ওর মুখের উপর। বুলেটটা বাম চোখ দিয়ে ঢুকে মাথার পেছনে একটা গর্ত করে বেরিয়ে গেল। কিন্তু হায়! এই ভয়াবহ আঘাতও তাকে আটকাতে পারল না। পরমুহূর্তে আমার প্রায় গায়ের উপর এসে পড়ল.. বইটির অন্যান্য কাহিনিগুলোও সুখপাঠ্য। যাঁরা শিকার কাহিনি আগ্রহ নিয়ে পড়েন, তাঁদের কাছে বইটি অবশ্যপাঠ্য বলে বিবেচিত হবে।