দক্ষিণ আফ্রিকায় সবাই তাকে ‘মাদিবা’ নামেই চেনে। এটি তার গোত্রীয় নাম। ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই জন্ম। জন্মের পর থেকেই সংগ্রাম। সেই সংগ্রাম এখনও থেমে নেই। সুদীর্ঘ সাতাশ বছর জেলখানায় কাটিয়ে ১৯৯০ সালে মুক্তি পান নেলসন রোলিহলাহলা ম্যান্ডেলা। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৯৩ সালে এই মহান নেতা নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। এখন অবসরে আসলেও তিনি থেমে নেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি গড়ে তুলেছেন এক সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন।’ এ ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে এখনও সংগ্রাম করছেন এই চিরসংগ্রামী। দক্ষিণ আফ্রিকায় সবাই তাকে ‘মাদিবা’ নামেই চেনে। এটি তার গোত্রীয় নাম। ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই জন্ম। জন্মের পর থেকেই সংগ্রাম। সেই সংগ্রাম এখনও থেমে নেই। সুদীর্ঘ সাতাশ বছর জেলখানায় কাটিয়ে ১৯৯০ সালে মুক্তি পান নেলসন রোলিহলাহলা ম্যান্ডেলা। ‘১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৯৩ সালে এই মহান নেতা নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। এখন অবসরে আসলেও তিনি থেমে নেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি গড়ে তুলেছেন এক সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন।’ এ ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে এখনও সংগ্রাম করছেন এই চিরসংগ্রামী।
জন্ম: জুলাই ১৮, ১৯১৮ সালে । নেলসন ম্যান্ডেলা থেম্বু রাজবংশের ক্যাডেট শাখায় জন্মগ্রহণ করেন। থেম্বু রাজবংশ দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশের ট্রান্সকেই অঞ্চলের শাসক। তাঁর জন্ম হয় ট্রান্সকেই এর রাজধানী উমতাতার নিকটবর্তী ম্ভেজো গ্রামে। তাঁর প্রপিতামহ ছিলেন নগুবেংচুকা (মৃত্যু ১৮৩২), যিনি ছিলেন থেম্বু জাতিগোষ্ঠীর ইনকোসি এনখুলু অর্থাৎ রাজা।এই রাজার পুত্র ম্যান্ডেলা হলেন নেলসন ম্যান্ডেলার পিতামহ। নেলসনের বংশগত নাম ম্যান্ডেলাই এই পিতামহ থেকেই পাওয়া। তবে নেলসনের পিতামহী ইক্সহিবা গোত্রের হওয়ায় রীতি অনুযায়ী তাঁর শাখার কেউ থেম্বু রাজবংশে আরোহণ করার অধিকার রাখেন না । ম্যান্ডেলার বাবা গাদলা হেনরি মপাকানইসা ম্ভেজো গ্রামের মোড়ল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরাগভাজন হওয়ার পরে তারা ম্যান্ডেলার পিতাকে পদচ্যুত করে। তিনি তখন তার পরিবারসহ কুনু গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তবে তা সত্ত্বেও ম্পাকানইসা ইনকোসিদের প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন এবং থেম্বুর শাসনকর্তা হিসাবে জোঙ্গিন্তাবা দালিন্দ্যেবোকে নির্বাচিত করায় ভূমিকা রাখেন। ম্পাকানইসার মৃত্যুর পর দালিন্দ্যেবো ম্যান্ডেলাকে পোষ্যপূত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। ম্যান্ডেলার পিতা ম্পাকানইসার ছিল চারজন স্ত্রী, ও সর্বমোট ১৩টি সন্তান (৪ পুত্র, ৯ কন্যা)। ম্যান্ডেলার মা ছিলেন ম্পাকানইসার ৩য় স্ত্রী নোসেকেনি ফ্যানি। ফ্যানি ছিলেন ম্পেম্ভু হোসা গোত্রের ন্কেদামার কন্যা। মাতামহের বাড়িতেই ম্যান্ডেলার শৈশব কাটে। তাঁর ডাক নাম "রোলিহ্লাহ্লা"র অর্থ হলো "গাছের ডাল ভাঙে যে", অর্থাৎ "দুষ্টু ছেলে"। ম্যান্ডেলা তাঁর পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময়ে তাঁর শিক্ষিকা ম্দিঙ্গানে তাঁর ইংরেজি নাম রাখেন "নেলসন"। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ম্যান্ডেলা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন রবেন দ্বীপে। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি কারামুক্ত হন। এর পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তাঁর গোত্রের দেয়া মাদিবা নামে পরিচিত। গত চার দশকে ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ভারত সরকার প্রদত্ত ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ভারতরত্ন পুরস্কার ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে নোবেল শান্তি পুরস্কার। তাছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারের অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন। তিনি ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ , ৯৫ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।