"আমার দেখা কৃষ্ণকায়ের দেশ" বইটির 'নিবেদন' নামক অংশ থেকে নেয়াঃ আমি সাহিত্যিক বা লেখক নই। লেখা আমার পেশাও নয়। জীবিকা অর্জনের তাগিদে ইথিওপিয়ায় গিয়েছিলাম। সেও অনেক দিন আগে। ১৯৭৯ ইং সালের শেষের দিকে। প্রায় দু’বছর সময় ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ছিলাম। আদ্দিস আবাবার কমার্শিয়াল স্কুলে পূর্ণকালীন শিক্ষক হিসেবে এবং একই সাথে এক বছর আদ্দিস-আবাবার শহরাঞ্চল নেফাস সিল্কের কম্প্রিহেনসিভ স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছি। ইতােমধ্যে ইথিওপিয়ায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাে বটেই। ফলে ইথিওপীয়দের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সামাজিক ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তন এসেছে। আমার লেখায় সেইসব পরিবর্তনের কথা নেই। আদ্দিসে থাকাকালীন ইথিওপিয়া, বিশেষ করে, আদ্দিস আবাবাকে যে ভাবে দেখেছি, যে ভাবে অনুভব করেছি আমার দেখা এবং অনুভূতিকে সেভাবেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এক কথায়, এটি একটি স্মৃতিচারণ। এই লেখায় যে সব তথ্য ও পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে, সে সবই মূলতঃ সেই সময়কার। আমার দেখা নিতান্তই সাদা চোখের দেখা, আর আমার অনুভূতিতে তেমন কোন বিশেষত্বও নেই। কিন্তু নিতান্ত সাদা চোখের দেখা, কিংবা বিশেষত্বহীন অনুভূতিকেও যদি কেউ হুবহু তুলে ধরতে চান, তবে কলমে জোর থাকতে হয়। সে জোর আমার নেই। তবু চেষ্টা করেছি, আমার দেখা বিষয়গুলাে ও অনুভূতিকে সহজ সরলভাবে তুলে ধরতে। কিন্তু অনেক কিছুই আছে, যা সহজভাবে বলতে চাইলেও সহজভাবে বলা যায় না। স্বয়ং কবিগুরই বলেছেন- ‘সহজ করে লিখতে আমায় বলাে যেসহজ কথা যায় না বলা সহজে।এমনতর অবস্থায়, আমার সীমাবদ্ধতার কথা জেনেও, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, সহজ কথা সহজভাবে বলতে, কোন ব্যর্থতা থাকলে, তার দায় আমার নিজের।