ভূমিকা সম্প্রতি বাংলাদেশে নারী-উন্নয়নের একটি ফল্গুধারা বয়ে চলেছে- একটি সম্ভবত অস্বীকার করা যাবে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্ষমতায়নের বিবিধক্ষেত্রে আমরা নারীকে পাচ্ছি অগ্রসরমান। সমস্যা-সংকুল আধুনিক জীবনায়নে একটি অগ্রসরমানতা কতটুকু তাৎপর্যময়, সে বিষয়ে হয়তো প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে। কিন্তু প্রতিভা-বিকাশের ক্ষেত্রে সৎ সাহসের সঙ্গে এগিয়ে এসে প্রতিকূল পরিপার্শ্বে নারী ক্রমাগত জয়যুক্ত হচ্ছে- এ দৃশ্য যে-কোন সমাজকর্মী বা বুদ্ধিজীবীর দৃষ্টি এড়াবে না।
নারী-উন্নয়নের সার্বিক কি যেমন যথার্থভাবে চিহ্নিত হয় নি, তেমনি তার বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসও পূর্ণাঙ্গরূপে রচিত হয় নি। উপন্যাস যেহেতু মানবসমাজের আভ্যন্তরীণ স্বরূপকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে অবলোকন করে এবং তুলে আনে অজানা ভূবনের নানা আলোকরশ্মি, এমন কি অন্ধকারের অসামান্য দৃশ্যাবলিও। তাই বাংলাদেশের মহিলা- রচিত উপন্যাসে বিয়ষ-বৈচিত্র্য ও জীবন-চিন্তা : ১৯৪৭-১৯৮৭ গ্রন্থে আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে উত্তরণের এক অনবদ্য চিত্র রচিত হতে দেখি। ড. আবেদা আফরোজা একটি রচনা করেছিলেন পি-এইচ.ডি গবেষণার অভিসন্দর্ভরূপে। কিন্তু বহু ব্যাপক তথ্য সংযোজিত করে, প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ দিয়ে- সামগ্রিক ইতিহাস, ব্যক্তি-জীবনচিত্র এবং সর্বোপরি নারী-দৃষ্টিকোণের সংস্থান নিশ্চিত করে তিনি এক অনন্য গবেষনাকর্মীরূপে পাই, তেমনি ১৯৮৮ অবধি, এমন কি তৎ-পরবর্তী বিষয়গত বৈচিত্র্যের লক্ষণ নিধৃারণ করতে পারি। অন্যান্য বহুবিধ বিসয়াবলির মধ্যে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় হবে “মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিক্রিয়াজাত প্রতিবেশ” সম্পর্কে তাঁর গবেষণালব্ধ অভিমত। “অবতরণিকা” ছাড়ও পাঁচটি অধ্যায় এবং পরিশিষ্ট নিয়ে নারী অধ্যয়নের ক্ষেত্রে এ-এক বিরাট ভোজ!
মৌলিক গ্রন্থটি রচনার বহু বছর পর আজ তার প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে আমি গ্রন্থকার ও প্রকাশককে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
মাহমুদ শাহ কোরেশী পৌষ ৮, ১৪১৯।
Title
বাংলাদেশের মহিলা-রচিত উপন্যাসে : বিষয়-বৈচিত্র্য ও জীবন-চিন্তা