ফ্ল্যাপে লিখা কথা চট্টগ্রাম এক প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জনপদ। চট্টগ্রাম শহরও অনেক প্রাচীন এক শহর। কোনো কোনো ঐতিহাসিক সূত্রমতে চট্টগ্রাম শহর দু’হাজার বছরের প্রাচীন এক নগর। রোমান ইতিহাসবিদ প্লিনি ৬৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ‘পেরিপ্লাস অফ দি ইরিথ্রিয়ান’ গ্রন্থে চট্টগ্রামের কথা বর্ণনা করেছেন। অনেক বিশ্ববিখ্যাত পর্যটক তাঁদের ভ্রমণ বিবরণে চট্টগ্রামের সৌন্দর্য ও প্রাচুর্যের কথা গুরুত্বের সাথে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু চট্টগ্রামের উপর এককভাবে রচিত গ্রন্থের সংখ্যা বেশি নয়। ফারসি ভাষায় রচিত ‘আহাদিসুল খাওয়ানিন’ বইটিই আমাদের জানামতে, চট্টগ্রামের উপর এককভাবে লেখা প্রথম বই। খান বাহাদুর হামিদুল্লাহ্ খান বইটি রচনার কাজ শেষ করেন ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৮৭১ সালে সেটি কলকাতা হতে প্রকাশিত হয়। অনেকের কাছে বইটি ‘তারিখে হামিদ’ নামেও পরিচিত। বাংলা ও দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাসচর্চায় বইটির নাম বিগত শতকে বহুবার বহু জায়গায় গুরুত্বের সাথে উল্লিখত হয়েছে। কিন্তু বইটি প্রকাশের পর প্রায় দেড়শো বছর অতিবাহিত হলেও সেটি এককাল বাংলা ভাষায় অনূদিত হয় নি। মূল ফারসি বইটিও বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য। ড. খালেদ মাসুকে রসুল চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস বিষয়ক এ বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন। তরুণ গবেষক অধ্যাপক তানবীর মুহাম্মদ দীর্ঘনি পরিশ্রম করে সে অনুবাদ সংশোধন ও সম্পাদনা করেছেন এবং তাতে টীকাভাষ্য সংযোজন করেছেন। ইতিহাস-অনুসন্ধিৎসু পাঠকদের কাছে বইটির বঙ্গানুবাদ প্রয়োজনীয় বিবেচিত হবে নিঃসন্দেহে এ-কথা বলা যায়।