ফ্ল্যাপে লিখা কথা ছোটগল্প বাংলাসাহিত্যের ঐতিহ্যবাহী এক জনপ্রিয় ধারা। এ ধারার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পালক পাবলিশার্স জাহাঙ্গীর মোহাম্মদের ক্যানেল ঘাটের কান্না শীর্ষক গল্পগ্রন্থ প্রকাশ করছে। গ্রন্থটি নিভৃতচারী এ লেখককে পাঠক সমাজের সামনে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
মুক্তিযোদ্ধা এবং আশির দশকে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কর্মী জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ দেশের সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে কবি, লেখক ও গবেষক হিসেবে সুপরিচিত। তাঁর গল্পে বাংলাদেশৈর গ্রামীন মানুষের সমকালী জীবন ও সংগ্রাম মূর্ত হয়ে ওঠে। নগর-বিকাশের বিকার, অবক্ষয়, যন্ত্রণা ও সমাজের প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকার আশাবাদ সামগ্রিক বাস্তবতায় জাদুকরী রূপ লাভ করে তাঁর লেখনীতে। তিনি ছোটগল্পে বাঙালির জাতীয় ঐতিহ্য, লোকবিশ্বাস, সংস্কার ও মানুষের সহজাত প্রতিবাদী চেতনার মিশ্রণ ঘটিয়েছেন অসামান্য দক্ষতায় । তাই তাঁর গল্পের সবুজ মাঠে মানুষের অবয়ব হয়ে শুয়ে থাকা ঘাসেরা মাথা তোলে, বহজাতিক পণ্য হয় পদলিত। তাঁর গল্পের ক্যানভাসে ইতিহাস বিস্মৃতি, বিকৃতি, কুসংস্কার ও অন্ধকার ভেদ করে মানুষের মনে আলোক রেখা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
জাহাঙ্গীর মোহাম্মদের লেখনীর শক্তিমত্তার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ১৯৮২ সালে ছোটগল্পে বাংলাদেশ পরিষদ পুরস্কার এবং অরণ্যে জনপদে কাব্যগ্রন্থ রচনার জন্য ২০১১ সালে নির্ণয় স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়। দেশে ও বিদেশে লেখকের আরও নয়টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। পালক পাবলিশার্স ২০১১ সালে তাঁর রচিত মহাভারতে প্রশাসন ও যোগাযোগের উপাদান শীর্ষক গবেষণা গ্রন্থটি প্রকাশ করে। আমি ক্যানেল ঘাটের কান্না গল্পগন্থটির বহুল প্রচার কামনা করি। ফোরকান স্বত্বাধিকার, পালক পাবলিশার্স