অনুবাদকের কথা সাহাবা কেরাম হলেন সরাসরি আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর হাতেগড়া মুসলমান। নবীজীর শিক্ষা ও দীক্ষায় ধন্য এই মানবকাফেলাটি হলেন পরবর্তী সব যুগের সকল মুসলমানের ইসলামি জিন্দেগির আদর্শ বা নমুনা। এই মহান জামায়াতের পদাঙ্কই পরবর্তী সকল মুসলমানের পথের দিশা। নবীজী (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘আমার সাহাবীরা নক্ষত্রের মতো। তাদের যে কারও অনুসরণ করলেই তোমরা সঠিক পথের দিশা পেয়ে যাবে।’ তো আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর সাহাবীগণ হলেন আমাদের ইসলামি জীবনের আদর্শ। জীবনের ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত ইসলামের যত আদেশ-নিষেধ ও শিক্ষা রয়েছে, এই সাহাবা কেরাম হলেন তাঁর বাস্তব উদাহরণ। কাজেই জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথ চলা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনে আমাদেরকে জানতে হবে, সাহাবা কেরামের ইসলামি জীবনের বাস্তব চিত্রটি কী ছিল। সেই চিত্রটিই অত্যন্ত দক্ষতা ও নৈপুণ্যের সঙ্গে আঁকা হয়েছে আলোচ্য বইটিতে।
লেখক বইটিকে দুটি অংশে ভাগ করেছেন। প্রথম অংশে সাহাবা ও সাহাবিয়াত (পুরুষ সাহাবা ও মহিলা সাহাবা) (রা.)-এর বোধ-বিশ্বাস, ইবাদত, লেনদেন, সামাজিক আচরণ, ব্যক্তিচরিত্র, দুনিয়াবিমুখতা ও তাকওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলোর চিত্র অঙ্কন করেছেন। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর হাতেগড়া মহান সাহাবা জামায়াতের রাষ্ট্রীয়, ধর্মীয় ও বিদ্যাগত সেবার সবিস্তার চিত্র, তাঁরা কীভাবে ইসলামের ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে অটুট রেখেছেন এবং কীভাবে ধর্ম, চরিত্র ও ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস ইত্যাদির সংরক্ষণ ও প্রসার ঘটিয়েছেন। এক কথায় লেখক বইটিতে সমগ্র পৃথিবীর সকল মুসলমানের আদর্শ মহান সাহাবা জামায়াতের ইসলামি জীবনের প্রামাণ্য চিত্র অত্যন্ত দক্ষতা ও নৈপুণ্যের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন। আমরা বইটির নাম দিয়েছি ‘উসওয়ায়ে আসহাবে রাসূল’। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর বাংলা ভাষায় আমাদের জানামতে এটিই একমাত্র বই। বইটির লেখক মাওলানা আবদুস সালাম নদভী ভারতের নাগরিক ছিলেন। এখন তিনি ইহজগতে বেঁচে নেই। আল্লাহ তায়ালা পরজীবনে তাঁর মর্যাদা বুলন্দ করুন।
অনুবাদ সম্পর্কে বেশি কিছু বলা প্রয়োজন বোধ করি না। অনুবাদের ভাষা নির্ভুল, প্রাঞ্জল ও সাবলীল করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি মন্দ হয়নি। সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য। আমরা তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনিই আমাদের সহায়। বিনীত মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন