ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা বইটিতে ইতিপূর্বে প্রকাশিত কয়েকটি রচনাকে সংকলিত করা হয়েছে।এ বিষয়ে নারী-আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা বেগম সুফিকা কামালের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য, “যুগে যুগে সেই নারীমনেরই বাস্তবচিত্র এই লেখার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, যাঁরা মা এবং মায়ের দায়িত্ব নিয়ে সংকটসঙ্কুল পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থার মধ্যে সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করতে চান। তাঁদের মন ও জীবন যে কত দুস্তর মরুভূমি পার হয়ে মরুদ্যাম সৃষ্টি করতে প্রয়াসী, সেই যুদ্ধের প্রতীকচিত্র এই ‘রুপে অরূপে ম্যাডোনা।’ কণ্ঠে গরল ধারণ করে নীলকণ্ঠ হয়ে শান্তির সন্ধানে যে-নারীচিত্র উন্মুখ হয়ে থাকে তার অনন্ত অণ্বেষার অন্ত কি কেউ কখনও নির্ণয় করতে পেরেছে? যুগে যুগে অমৃত হাতে নিয়ে নারী অপেক্ষা করে কোথায় সে সঞ্চিত করবে এই সুধা।” বইটিতে যেমন রয়েছে অজস্র সমস্যা ও বঞ্চনার কথা-তেমনি রয়েছে বঞ্চিত নারীদের ঘুরে দাঁড়াবার এক দৃঢ় সংস্কল্পের কথা। বইটি নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্যই এক প্রয়োজনীয় পাঠ হিসেবে বিবেচিত হবে। সূচিপত্র *লেখকের কথা *মেয়ের কথা *পিতার কাছে চিঠি *মায়ের কথা *রূপে অরুপে ম্যাডোনা *মেয়ের কথা *এক মহিলার জয় পরাজয় *আমারে করিও ক্ষমা *আমি কার্তিকুন্নেছা বলছি
অধ্যাপক ড. হাসনা বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক ছিলেন। দশম শ্রেণীতে উঠতেই মাত্র চৌদ্দ বৎসর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পরের বৎসর মায়ের একান্ত অনুরােধে ১৯৫০ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষা দেন এবং কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তারপর সুদীর্ঘ তেরােটি বৎসর সংসারধর্ম পালন করেন। ছয় সন্তানের জননী হাসনা বেগম আবার ঢাকা সিটি নাইট কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯৬৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দেন এবং স্কলারশীপসহ প্রথম বিভাগ পান। এরপর তাকে আর কিছু থামাতে পারেনি। সংসারের যাবতীয় কর্তব্য পালন করে তিনি দর্শনে বিএ অনার্স ও এমএ পাস করেন। প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন দুইটি পরীক্ষায়। ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে প্রভাষক পদে যােগদান করেন। এরপর ১৯৭৩-এ তিনি অস্ট্রেলিয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যান। ১৯৭৮-এর এপ্রিল মাসে তিনি পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগদান করেন।