হিরোশিমা থেকে পূর্ব দিকে এক'শ মাইলেরও বেশী দূরে একটি গ্রামের নাম কোবাতাকে। এই গ্রামের বাসিন্দা শিগেমাতসু শিযুমা (এরপর থেকে শুধু শিযুমা), তার স্ত্রী শিগেকো আর ইয়াসুকো এরা তিনজনই এই কাহিনীর প্রধান পাত্র-পাত্রী। ইয়াসুকো হচ্ছে শিগেকো'র বোনের মেয়ে, নিঃসন্তান শিযুমা দম্পতি এই মেয়েটিকে ছোটবেলা থেকেই তাদের নিজেদের মেয়ের মতো প্রতিপালন করছেন। ইয়াসুকোর বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু শিযুমা'র ঐকান্তিক চেষ্টা সত্ত্বেও সম্বন্ধগুলো বার বারই ভেঙ্গে যায়। আর এই দুঃশ্চিন্তাই এখন শিযুমা'র মাথা ব্যথার বড় কারণ। মেয়েটি দেখতে- শুনতে কিংবা আচার-আচরণে সব দিক দিয়েই ভালো। অনেক ভালো ভালো সম্বন্ধও এসেছে। দু'একবার কথা বার্তাও প্রায় পাকাপাকি হয়েছে অথচ ফলাফল সেই আগের মতোই অর্থাৎ হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। এর পেছনে কারণ একটাই, আর তা হচ্ছে সামান্য সত্যের মিশেল দেয়া নিছক একটা গুজব। গুজবটা হচ্ছে যুদ্ধের শেষ দিকে ইয়াসুকো হিরোশিমা শহরের সেকেন্ড মিডল্ স্কুল সার্ভিস কোরের রন্ধনশালায় কাজ করতো এবং আণবিক বোমা পড়ার সময় শহরেই ছিল বলে মারাত্মক তেজস্ক্রিয়তার রোগে আক্রান্ত হয়েছে, যা কখনো সারবে না। শিযুমা যতবারই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এগিয়েছেন, প্রতিবারই পাড়া-প্রতিবেশীদের কেউ না কেউ বর পক্ষের কানে পাত্রীর দূরারোগ্য ব্যাধির কথা তুলেছে। আর তাতে শুধু যে বিয়েই ভেঙ্গেছে তাই নয়, সেই সঙ্গে শিযুমা দম্পতি যে সত্য গোপন করে তাদের পালিতা কন্যার বিয়ে দিয়ে নিজেরা দায়মুক্ত ।