‘আপাতত দেখছি তোমাকে/ দেখছি তোমার সমুদ্র-মন্থন চরের শরীর/ লবণাক্ত জলের দহনে কৃশকায় কোমরের দোলাচল,/ আপাতত তোমার চরের বুকে কৃষিকাজের মৌসুম/ তামাটে কৃষক আমি-লাঙলে দারুণ বেগ/ পাহাড়ের চূড়া থেকে অপলক দেখছি তোমাকে/ গিরিখাদ পললের ভাঁজে-শীতল আঁধারে উষ্ণতা পসারে/ দূরগামী ট্রেনের রুপালি ইশারায়;’ [আপাতত দেখছি তোমাকে : ক ফোঁটা জলের টানে]। কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক আহমেদ ফিরোজ-এর ১ম কাব্যগ্রন্থ ক ফোঁটা জলের টানে। এটি তাঁর প্রকাশিত ১ম বই। ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি যখন আধুনিক বাংলা কবিতা : ঠিক সে সময়েই তিনি তাঁর শব্দাক্ষরযাত্রায় রচনা করেছেন স্বপ্ন-মৃত্যু-ভালোবাসার...Z আহমেদ ফিরোজ-এর কাব্যালোচনায় কবি ওমর আলী লিখেছেন, কবিতায় বিচিত্র শব্দ চয়ন এবং সাধারণ কাব্য পিপাসুর বোধগম্য সহজতা-এখন উত্তরাধুনিক কবিতায় মেলে না। যারা জসীমউদদীন ও বন্দে আলী মিয়ার কবিতা পড়ে রস পেতে আগ্রহী, কিছুটা কিংবা বেশ ভালোভাবেই হোঁচট খাবেন বর্তমান কবিতা পড়ে। অবশ্য তাকে অভ্যস্ত হতে সময় লাগবে। বিষ্ণু দে’র কবিতা পড়ে একসময় তিরিশের দশকে রবীন্দ্র-নজরুলের কবিতা-পাঠকগণ হোঁচট খেতেন। সে কথা থাক, ক ফোঁটা জলের টানে কাব্যগ্রন্থে আহমেদ ফিরোজ-এর কবি প্রকরণের দক্ষতা স্পষ্ট। তিনি শব্দ ও বিষয়বস্তু নিয়ে খেলা করেন। একজন পাঠকের বিভিন্ন রকমের চিন্তা ও অনুভূতি একই কবিতায় উপস্থাপন করেন। যেমন-এ-শহরে আগন্তুক এসেছে এক-প্রেমিক/ ভয়ঙ্কর বীভৎস্যুক ক্ষ্যাপা-পথিক-প্রহরী (আগন্তুক)। ...আমি আগেই বলেছি আহমেদ ফিরোজ সুদক্ষ ও পরিপক্ক ভাবনার কবি। তাঁর কবিতায় সুন্দরভাবে ইঙ্গিত ও রতিরস নিখুঁত ফুটে উঠেছে। যেখানে পাঠককে জাগিয়ে তোলেন চেতনায়।... [দৈনিক আজকের কাগজ, ১১ মে ২০০৬]
কবিতা রচনা দিয়ে সাহিত্যযাত্রা, গান-গল্প-প্রবন্ধ-ছড়া-চিত্রনাট্য-কলাম প্রভৃতি লিখে চলেছেন। আধুনিক বিশ্বে ভয়ঙ্কর দুটি শক্তি : রাজনীতিক ও যাজক, তাদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে তুলে ধরেছেন কলম-সম্ভাবনা গদ্য-পদ্য, লিখছেন খোলামত ও মতাদর্শ।