গল্পের জন্য অপেক্ষা এমনকি কবিতার জন্যও, অপেক্ষা ভালোলাগার এবং ভালোবাসার। প্রচলিত ও তথাকথিতের বাইরে খুঁজে ফেরা-অস্বীকার এবং প্রত্যাখ্যান করা। মানবাত্মার মর্মযন্ত্রণা ও স্বেদরক্ত নিয়ে বেড়ে ওঠা এক-একটা জীবন : ‘আজ আমাদের ট্র্যাজেডি একটি বিশ্বজোড়া সর্বব্যাপক এক শারীরিক আতঙ্ক-এতদিন ধরে এই আতঙ্ক আমরা বহন করে এসেছি, কিন্তু এখন তা একেবারেই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।’ ‘নিজের ভেতরকার সমস্যায় মানব-হৃদয় কীরকম জট পাকিয়ে গিয়েছে।’ ‘তাঁকে আবার ফিরে শিখতে হবে সব। নিজেকে তাঁকে শেখাতে হবে, সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে অধম হলো আতঙ্কে কুঁকড়ে-গুটিয়ে যাওয়া; আর নিজেকে তা শেখাবার পর, বরাবরের জন্যে তা ভুলে যেতে হবে, তাঁর কারখানাঘরে হৃদয়েরই পুরনো সব সত্য আর বিধান ছাড়া কিছুই যেন না-থাকে।’ ধর্ম, রাজনীতি আমাদের আপাত বেড়ে ওঠাকে করেছে দ্বিধান্বিত; যাজক ও রাজনীতিক নিত্যদিনের খাবার কেড়ে নিয়ে মেদভুঁড়ি সাজিয়েছে বেশ। আমাদের পরাজয়ের দিন এভাবে ঘনিয়ে আসে। অবশিষ্ট আশা, স্বপ্ন ও ভালোবাসা বিশ্বাস অথবা মূল্যবোধ-যা ধর্মীয় প্রচারণাকে সমর্থন করে না। ভালোবাসার জন্য ভালোবাসা দিয়েই ভালোবাসা জয় করতে হয়-অনন্তকালের এই-ই নিয়ম। আবার ভেঙে পড়ার ভয়ঙ্কর শব্দযন্ত্রণা হয়ে ওঠে দূরাগত ভুলচুক। গল্পের জন্য যা যা দরকার ছিল, তা হয়তো নেই; কিন্তু যা আছে, তা হলো-নতুন দিনের, নতুন ভাবনার এবং নতুন করে বলবার-আলাদা অথবা স্বতন্ত্র যাত্রার দৃশ্যাদৃশ্য অবয়ব। বিবিক্তযাত্রা এখানে শূন্যযাত্রায় সমুপস্থিত হয়েছে, দেখা দিয়েছে নতুন এক গল্পাবয়বের-যা কাব্যশরীরে সুবিস্তৃত এবং সম্ভাবনা-দীপ্ত; যেন অপেক্ষা নতুন একটি স্বপ্নদিনের, যেখানে রাত্রিরা ভীষণ বিবাগি-স্বপ্নঘুমে ঘুমস্বপ্নে।
কবিতা রচনা দিয়ে সাহিত্যযাত্রা, গান-গল্প-প্রবন্ধ-ছড়া-চিত্রনাট্য-কলাম প্রভৃতি লিখে চলেছেন। আধুনিক বিশ্বে ভয়ঙ্কর দুটি শক্তি : রাজনীতিক ও যাজক, তাদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে তুলে ধরেছেন কলম-সম্ভাবনা গদ্য-পদ্য, লিখছেন খোলামত ও মতাদর্শ।