"হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী: কাছে থেকে দেখা" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী জন্মেছিলেন অসাধারণ প্রতিভাবানদের সমাবেশে উজ্জ্বল এক অভিজাত মুসলিম পরিবারে সােনার চামচ মুখে করে। বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে এসে পেশাগত দক্ষতা প্রমাণের পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে এবং অচিরেই পরিণত হন বিভাগপূর্ব বাংলার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী – এমনিতরাে নানা রাজনৈতিক শীর্ষপদে যেমন অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন তিনি, তেমনি পাকিস্তানি কারাগারের পীড়নও সইতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর অনেকানেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়, তেমনি তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়েও প্রচলিত নানা গল্পকথা। দু’হাতে যেমন উপার্জন করেছেন, ব্যয়েও ছিলেন তেমনি অকুণ্ঠ। অভিজাত জীবনরীতিতে যেমন অভ্যস্ত, তেমনি স্বচ্ছন্দ ছিলেন সাধারণ জনজীবনের ধারাতেও। পাকিস্তানের বঙ্কিম আর ন্যূনতম মৌলিক মানবাধিকার-বিরােধী রাজনীতির পট-পরিসরে মৃত্যুর আগ দিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের জন্য তাঁর নিবেদিতপ্রাণ প্রয়াস দেশবাসীর চিত্তে স্থায়ীভাবে খোদিত রয়েছে। এই গ্রন্থের লেখক, সেইকালের তরুণ ছাত্রনেতা মাহমুদ নূরুল হুদা ১৯৪২ সাল থেকে হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক সচিব হিসেবে দীর্ঘ আট বছর কাজ করেন। সেই সুবাদে এই ব্যক্তিত্বকে ঘনিষ্ঠভাবে জানা ও দেখার দুর্লভ সুযােগ হয়েছিল তাঁর। সেই ঘনিষ্ঠ অবলােকনের কথাই এখানে তিনি বিবৃত করেছেন। সেইসঙ্গে তুলে ধরেছেন সােহরাওয়ার্দীর জীবন ও কর্ম এবং তৎকালীন রাজনীতির বহুকৌণিক পরিচয়। ইতিহাস-কথা ও ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ – এই দুয়ের সঙ্গমে আকর্ষণীয় এই গ্রন্থ অদূর ইতিহাসের এক অপরিহার্য দলিল।