পুটার্ককে বিশ্বসাহিত্যে শ্রেষ্ঠ জীবনীকারের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। রেনেসাঁস-পরবর্তী য়ুরােপে ক্লাসিক্যাল অর্থাৎ গ্রিক ও লাটিন লেখকদের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় পুটার্কের (৪৬ খ্রি.পূ.১২০ খ্রিস্টাব্দ) Parallel lives বা সমান্তরাল জীবনীমালা’ গ্রিক ও রােমান কীর্তিমানদের জীবনীর আকরগ্রন্থরূপে গৃহীত হয়ে থাকে। পুটার্কের জন্ম গ্রিসদেশের বােয়েটিয়ার অন্তর্গত চেরােনিয়ায়, ৪৬ খ্রিস্টপূর্বে। তাঁর পিতা এরিসটোবােলাস একজন জীবনীকার ও দার্শনিক। পুটার্ক এথেন্সে দর্শন ও গণিতে শিক্ষালাভ করেন। এরপর তাকে বার বার কার্যসূত্রে রােমে যেতে হয়। উল্লেখ্য, সে-সময় গ্রিসদেশ হছিল রােমান-সাম্রাজ্যের অধীন। তিনি রােমান-সম্রাট ট্রাজান ও হারদিন-এর সাথে পরিচিত হন এবং রােমের নাগরিকত্বও লাভ করেন। বার বার রােমে আসার ফলে তিনি লাটিন ভাষায় পটুত্ব লাভ করেন; রােমের যশস্বী পুরুষদের জানার সুযােগ তার ঘটে। ফলে তাঁর জীবনীমালা সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। জন্মসূত্রে তিনি গ্রিক এবং গ্রিসের। বাসিন্দা; আবার তাঁর মানস গড়ে ওঠে লাটিন সংস্কৃতির আলােকে। ফলে তার জীবনীমালায় একদিকে গ্রিক, অপরদিকে রােমান প্রবাদপুরুষদের সমাহার ঘটেছে। পুটার্ক চোরানিয়াতে নাগরিকরূপে গুরুদায়িত্ব পালন করেন। তবু তিনি নানা জায়গায় ভ্রমণ করেন-মধ্য গ্রিস, স্পার্টা, ক্রনিথ, সার্দিস, আলেকজান্দ্রিয়া, ইত্যাদি। চেরােনিয়ায় বাস করেও তিনি এথেন্সের একাডেমির সাথে সংযােগ রাখেন এবং ৯৫ খ্রি. পূ. থেকে ডেলফির মন্দিরের পুরােহিতের পদ লাভ করেন-সম্ভবত সম্রাট ট্রাজানের বদৌলতে।