"কেস হিস্ট্রি-১"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: ১৯৮৮ সাল। আমি ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি। তখন সমগ্র ঢাকা মহানগরে মাত্র ১২টা থানা। সম্ভবত আমি সবচেয়ে কম বয়সে ঢাকা মহানগর পুলিশে থানার ওসি হয়েছি। বাকী ১১টি থানার ওসি সাহেবদের সবাই আমার চেয়ে কমপক্ষে ৯/১০ বছরের সিনিয়র ছিলেন। ফলে সবাই আমাকে আদর স্নেহ করতেন, আবার অনেকে আড়ালে ঈর্ষাকাতরও ছিলেন। ক্যান্টনমেন্ট থানার অধীনে পুরাে সেনানিবাস, এয়ারফোর্স বেজ, জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পুরনাে বিমান বন্দর,মিরপুর লিংক রােডের পূর্বপাশসহ বিরাট এলাকা ছিল। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরটি থানা এলাকাধীন হওয়ায় পুলিশ বিভাগের যে কোন সিনিয়র কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রীয় যে কোন অতিথির আগমন নির্গমনে অফিসিয়াল ডিউটি না থাকলেও ওসি ক্যান্টনমেন্ট থানার ব্যক্তিগত উপস্থিতি ভ্রমণের মর্যাদার জন্য আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আবার এয়ারপাের্ট এবং উত্তরা মডেল টাউনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণের যাতায়াতের কারণে বিমানবন্দর সড়কটির প্রতি সব সময়ই বিশেষ গুরুত্বসহ দৃষ্টি রাখতে হত। সেই কারণে সারাদিনের কার্যক্রম শেষ করে যখন বিশ্রামের জন্য গভীর রাতে বাসায় ফিরতাম, তখন পরের দিনের কর্মসূচী দেখে নিতাম। ১৯৮৯ সালের মে মাসের মাঝামাঝি। ইতিমধ্যে আমি একজন প্রফেশনাল ওসি হয়ে গেছি। প্রথম ওসি হওয়ার শিহরণ- উত্তেজনা, সংশয়-আনন্দ ও গর্বিত অনুভুতি তখন অবদমিত ও গা সওয়া হয়ে গেছে। সেদিনের তারিখটা সঠিক মনে নেই। পরের দিন তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রীয় সফরে “ফিজিতে যাওয়ার কর্মসূচী। সারাদিন সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত বিমান বন্দর সড়কের কোন ক্রটি যাতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির দৃষ্টিগােচর না হয় সেজন্য। দিনের বেলায়ই রােড লাইট জ্বালিয়ে একদল পরীক্ষা করছে সােডিয়াম লাইটগুলি ঠিক আছে কিনা অথবা চার্জ হয়ে আলাে পূর্ণমাত্রায় বিচ্ছুরিত করছে কিনা। সামান্য ক্রটিতেই অবলীলায় পরিবর্তিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে ছ' হাজার টাকা দামের একেকটি লাইট। অপর কেস হিস্ট্রি