“পবিত্র লালন" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বাংলাভাষায় গ্রন্থাদি প্রণয়নের মধ্যে যে প্রাঞ্জলতা দেখতে পাওয়া যায় তা-ই প্রমাণ করে যে, তিনি একজন ভাষাসৈনিক ও বীরবাঙালি। তাঁর গ্রন্থাদির কোথাও বিদেশী-ভাষার চিহ্ন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। আমাদের বাংলাভাষায় প্রবেশকৃত বিদেশী শব্দাবলির বাংলা অনুবাদ একমাত্র তাঁর লেখার মধ্যেই দেখতে পাওয়া যায় । মহাগ্রন্থাদির মধ্যে ব্যবহৃত তথ্য ও সূত্রাদির উৎস যে মানবদেহ, বাঙালি গবেষকগণের মধ্যে তিনিই সর্ব প্রথম প্রমাণ করতে সক্ষম হন। তিনিই বাংলাভাষায় স্মরণকালের ইতিহাস বিখ্যাত আধ্যাত্মিক বিজ্ঞান প্রণয়ন করেন। এ মহান বাঙালি ও আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানী সম্পূর্ণ বাংলাভাষায় আধ্যাতিক বিজ্ঞানের সব সূত্র ও নীতিমালা প্রণয়ন করেন। বিধায় তাঁকে আধ্যাত্মিকবিজ্ঞানের জনকও বলা হয়। কারণ তাঁর গবেষণা ও রচনার পূর্বে, বাংলাভাষায় আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানের তেমন কিছুই ছিল। ধর্ম গ্রন্থাদিও ছিল অজানা ও অচেনা। পণ্ডিতরা যে যা বলত, আমাদেরকেও নির্দ্বিধায় তা-ই মেনে নিতে হতাে। কিন্তু তাঁর নিরলস ও নিরবিচ্ছিন্ন গবেষণার দ্বারা, আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানের সূত্রাদি আবিষ্কার হওয়ার পর, ধর্মীয় সংস্কার ও ধর্মীয় গল্পকাহিনী যাচাই ও বাছাইয়ের দ্বার উন্মােচিত হয়েছে। এককভাবে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন।
একবিংশ শতাব্দির বিশিষ্ট সংস্কারক ও আধ্যাত্মিক গবেষক বলন কাঁইজি, বেদ ত্রিপিটক তৌরাত যাবুর ইঞ্জিল কুরান ও লালন ইত্যাদি গ্রন্থ গবেষণা করে, দেখতে পান যে, সব গ্রন্থের মূলশিক্ষা এক ও অভিন্ন। তিনি আরাে লক্ষ্য করেন যে, বিশ্বের সব মহাগ্রন্থ মানব দেহের দৈবিকাদি ও সংখ্যা সূত্রাদি ব্যবহার করেই নির্মাণ করা হয়েছে। রূপক আকারে নির্মিত গ্রন্থ গ্রন্থিকা সবই আধ্যাত্মিক-তত্ত্ব, দেহতত্ত্ব ও আত্মতত্ত্ব ভিত্তিক। তাঁর গবেষণাকৃত পাণ্ডুলিপি-গুলাের মধ্যে জ্ঞান পিপাসু শিষ্যগণের উদ্যোগে বলনতত্ত্বাবলি, আধ্যাত্মিকবিদ্যা পরিচিতি, আত্মতত্ত্ব ভেদ (১ম ও ৩য় খণ্ড), পরম্পরাতত্ত্ব ভেদ (১ম, ২য় ও ৩য় খণ্ড), পবিত্র লালন, (লালন) আধ্যাত্মিক অভিধান ও (লালন ভাবার্থের) আধ্যাত্মিক অভিধান ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণার পাশাপাশি বাংলাভাষায় আধ্যাত্মিক বিদ্যার ভিত্তি (বেজমেন্ট ওফ স্পিরিচুয়েলিজম, basement of Spiritualism) নির্মাণের লক্ষ্যে আধ্যাত্মিক সূত্রাবলি, আধ্যাত্মিক টীকাসমগ্র আধ্যাত্মিক বিজ্ঞান ও প্রয়ােজনীয় আধ্যাত্মিক অভিধানাদি প্রণয়নের জন্য, তিনি এককভাবে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন।