ভূমিকা অনেকদিন হলো : বছর পঁয়ত্রিশ তো হবেই - আমরা কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিলে ছোট ছোট দশ খণ্ডে ‘জানবার কথা’ বলে বই তৈরি করেছিলাম। তখন যাঁরা আমাদের দলে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখন বেঁচে নেই; কেউ কেউ আবার আমাদের পুরানো দল ছেড়ে গিয়েছেন। কিন্তু সেই পুরোনো দিনগুলোর কথা ভাবতে এখনও কিছুটা উত্তেজিত লাগে। দশমাথা এক করে ভাববার চেষ্টা, আর প্রত্যেকেরেই উৎসাহ প্রবল, বিশ্বাস গভীর। তখনকার পৃথিবীটাও হয়তো কিছুটা অন্যরকম ছিল। সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ায় কোনও সংকট চোখে পড়ত না; সারা পৃথিবীর খেটে খাওয়া মানুষের তারা ছিল আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্র।
এখন বেশকিছু যেন রদবদল হয়েছে। অনেক সংশয় উঠেছে। বিরুদ্ধ সমালোচকেরা সোৎসাহে হাসি-তামাশা শুরু করেছেন। বিশ্বস্ত কর্মীদের মধ্যে কখনো হতাশার ভাব।
‘জানবার কথা’র শেষ বা দশম খণ্ড ছিল এই বই- ‘সত্যের সন্ধানে মানুষ’ । আমার লেখা । তখন ঠিক কি লিখেছিলাম হুবহু মনে ছিল না। নতুন করে ছাপাবার প্রস্তাব যখন এল, পুরোনো ছেঁড়াখোঁড়া কপিটা আবার উল্টে দেখলাম।
মনে হলো, তথ্য বদলায় , বদলেছে। কিন্তু সত্য অত সহজে বদলায় না। সত্যের সন্ধানও নয়। সংগ্রামে নতুন সমস্যার মাথা তুলেছে ঠিকই, কিন্তু মূল সমস্যাটা একই থেকেছে । তাই নতুন করে ছাপায় কোনো বাধা নেই। হয়তো দরকারও আছে। এইসব দশ কথা ভেবে পুনর্মুদ্রণের প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেলাম।
কিন্তু চরম বিচারক অবশ্যই পাঠকেরা। তাঁরা কি বলেন, না বলেন, তা জানবার আগ্রহে থাকলাম। দেবীপ্রসাদ চট্রোপাধ্যায়
Debiprasad Chattopadhyaya (জন্ম: ১৯ নভেম্বর, ১৯১৮ - মৃত্যু: ৮ মে, ১৯৯৩) ভারতের একজন প্রখ্যাত মার্কসবাদী দার্শনিক। তিনি প্রাচীন ভারতের দর্শনের বস্তুবাদকে উদ্ঘাটন করেছেন। তার সবচেয়ে বড় কাজ হল লোকায়তের প্রাচীন দর্শনকে তিনি বিরুদ্ধপক্ষের বিকৃতি হতে রক্ষা করেন এবং তা সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তিনি প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানের ইতিহাস ও বিজ্ঞানের পদ্ধতি সম্পর্কেও গবেষণা করেছেন বিশেষ করে প্রাচীন চিকিৎসক চরক ও শ্রুশ্রুত সম্পর্কে।