ফ্ল্যাপে গ্রামে নগরে, পাড়া মহল্লায় নানা সংগঠন গড়ে উঠে। দেখা যায় অনেক সংগঠন বেশি দিন টিকে না-টিকে না থাকতে পারার পিছনে ক্রিয়শীল থাকে নানা উপদান। কোন জাতি সুসংগঠিত হতে না পারার এক বড় কারণ সংগঠনের অমন ভঙ্গুরতা। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ যথার্থই ভাবেন, ‘একটি জাতি ছোট বড় অসংখ্য সংগঠনের নাম। এই সংগঠনগুলো সংখ্যায় যত বেশি হবে এবং শক্তিতে যত অপরাজেয় হবে ঐ জাতিও হবে তত অপ্র্রতিরোধ্য।’ ’জাগরণী’ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন- চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলাস্থ দক্ষিণ বরুমচড়া গ্রামের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, এক সময় নাম ছিল ‘সাউথ বরুমচড়া কালচারাল এসোসিয়েশন’। পঞ্চাশ-এর দশকের প্রথম দিকে হাইস্কুলে পড়ুয়া ক’জন শিক্ষার্থীর হাতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকায় আরো আগে, ত্রিশ-এর দশকে স্বেচ্ছাসেবী সমবায় সমিতি যাত্রা শুরু করে। প্রধানত এই সমিতির যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল, পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে তার উত্তরাধিকারিত্ব লাভ করে ‘জাগরণী’। সুদীর্ঘ পরিসর। এই দীর্ঘ সময়কালজুড়ে সমাজসোব, সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে সংগঠনের যে ধারাবাহিক বিচরণ তার স্মৃতি-সম্ভার- ‘সংঘ সংলাপ’। এটি গতানুগতিক ধারার স্মরণিকা নয়- নিজস্ব বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত আলাদা আদলের সংঘচরিত।
ভূমিকা মুগ্ধতা এবং বিস্ময় আমাকে পেয়ে বসেছে, ঘোর কাটতে সময় লাগবে। পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠাগুলো আন্তরিকতায়, ভালোবাসায় টলমল করছে যেন। বাংলাদেশের অত্যন্ত সমৃদ্ধ জনপদ চট্টগ্রাম- বিত্তে যেমন চিত্তেও। আমরা যারা বাংলাভাষায় কথা বলি, আত্মপরিচয়ের শিকড় সন্ধান করি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, ডক্টর মুহাম্মদ এনামুল হক, আবুল ফজল, প্রফেসর আহমদ শরিফ, প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল করিমের কাছে চুল থেকে নখ পর্যন্ত ঋণী। বৃটিশ রাজের রমরমার যুগে জালালাবাদ কয়েকদিন স্বাধীন ছিল। আমরা আজ ভুলে যেতে পারি কিন্তু ওরা, দুর্দান্ত ইংরেজরাজ কিছুতেই ভুলতে পারবে না। পাকিস্তান আন্দোলন এবং পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই বাঙালিকে বঞ্চনা আর প্রতারণার ফাঁদে জড়িয়ে ফেলা, ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের মুখে বীর চট্টলার অপরিসীম ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতেই হবে। সাহিত্য, সংগীত, নৃত্য, চলচ্চিত্র, নাটক ও চিত্রকলায় আজ আমরা যেখানে এসে পৌছেছি সেখানে চট্টগ্রাম তো অগ্রপথিকেরই দায়িত্ব পালন করেছে। করে যাচ্ছে। সেই চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার দক্ষিণ বরুমচড়ার একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘জাগরণী’ - এশিয়ার স্মরণিকার কোন নামই তাদের পছন্দ হয়নি, শেষ পর্যন্ত নাম রেখেছে ’সংঘ-সংলাপ’ । সংগঠনের জন্মের