নকশী কাথার মাঠের কবি দেশের পুরাতন রত্ন ভাণ্ডারকে নূতনভাবে উজ্জ্বল করিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে অনাগত রাজ্যের বার্তা বহিয়া আনিয়াছেন। রাখালী নামক কাব্যে ইহার প্রতিভার যে পরিচয় পাইয়াছিলাম, নকশী কাথার মাঠ এ তাহার পূর্ণ বিকাশ দেখিতে পাইতেছি। বহু দিন হইল শরৎচন্দ্রের বিশ্ববিশ্রুত প্রতিভার পরিচয় পাইয়া আমি ভারতবর্ষে তাহার প্রতি অভিনন্দন জানাইয়াছিলাম, আজ নকশী কাথার মাঠ এর কবিকেও আমি কিঞ্চিৎ দ্বিধার সহিত সম্বর্দ্ধনা জানাইতেছি। বাঙ্গলা সাহিত্যে কাব্যের পাঠ একরূপ উঠিয়া গিয়াছে। কণিকাতে রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছিলেন একটা মহাকাব্য রচনার তাহার সাধ ছিল, কিন্ত তাহার মর্ম্মের কথা শত সুরে বাজিয়া উঠিল এবং মহাকাব্যের স্থান গীতিকবিতা অধিকার করিয়া বসিল। কবি হয়ত ইহা পরিহাস করিয়াই বলিয়াছিলেন, কিন্ত কবির এই উক্তির পর বাঙ্গলার উদীয়মান কবিরা কবিতায় উপাখ্যান রচনা ছাড়িয়ে দিলেন। রবীন্দ্রনাথের কথা ও কাহিনীর ধরনে মাঝে মাঝে ছোট ছোট কাব্যোপখ্যান পাওয়া যায় সত্য, কিন্ত অধুনা কাব্যের বাজার বড় মন্দা। জসীম উদ্দীনের এই বইখানি ছোট হইলেও ইহা একখানি কাব্য। ইহার উপাদান বাঙ্গলীর চিরাভ্যস্ত, গীতিকবিতার কতকগুলি সুর ও ছন্দ, কিন্ত নানা সুর একত্র করিয়া একটা বড় রাগিণী সৃষ্টি করার শিল্পশক্তি ইহার আছে।
১৯৭২-এ নাসির আলী মামুন বাংলাদেশে পােট্রেট ফটোগ্রাফির সূচনা। করেন। আমাদের কালের শ্রেষ্ঠ মানুষদের বিভিন্ন দুর্লভ মুহূর্তগুলাে। অত্যন্ত পারদর্শিতার সঙ্গে ধরে রেখেছেন আলােকচিত্রে এবং তার । ক্যামেরায় ধারণ করা খ্যাতিমানদের পােট্রেটের আলাে-আঁধারের | ঐশ্বরিক স্পর্শ তাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সুনাম এনে দিয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাকার গ্রহণের অভিনবত্বের পাশাপাশি ঘর। নাই' শিরােনামে তাঁর নেয়া গৃহহীনদের সাক্ষাঙ্কার সিরিজটি বাঙালি। পাঠকদের বিশেষ আগ্রহের বিষয়। এক্ষেত্রে তিনি এক নতুন ঘরানার। জন্ম দিয়েছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ ১০টি। দেশে ও বিদেশে একক। আলােকচিত্র প্রদর্শনীর সংখ্যা ৫৩টি। একাধিকবার ভ্রমণ করেছেন। ইউরােপ-আমেরিকার বহু দেশ। আলােকচিত্রে বন্দি করেছেন। সেইসব দেশের অনেক বরেণ্য ব্যক্তিকে। 'ফটোজিয়াম’ নামে। ফটোগ্রাফির জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ১৯৫৩-। এর ১ জুলাই ঢাকায় নাসির আলী মামুনের জন্ম ।