জন্মলগ্ন থেকেই বাঙালি জাতি ছিল সংগ্রামী ও স্বাধীনচেতা। বাংলার মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘতম ইতিহাস। ১৭৫৭ সাল হতে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পূর্ব পর্যন্ত সময়কাল ছিল ইংরেজ হটাও আন্দোলন। বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষায় বাঙালিরা ছিল সংকল্পবদ্ধ। পাঠান আমলে 'বঙ্গ' নামে বাংলার সকল জনপদ সর্বপ্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়। আকবরের আমলে এসে 'সুবা বাংলা' এবং ইংরেজ আমলে 'বেঙ্গল' নামে বাংলাদেশ একটি প্রদেশের মর্যাদা লাভ করে। বাংলার প্রাচীন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় দিল্লীর মুসলিম সুলতানদের শাসনকাল বাদ দিলে স্বাধীন সুলতানী আমলের প্রায় দু'শ বছর হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ গঠনের ইতিহাসে একটি 'মাইল ষ্টোন'। সুলতানী আমলেই প্রথম গৌড় ও বঙ্গ মিলে একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়। গৌড় রাজ্য বলে একটি স্বাধীন রাজ্যের কথা জানা যায়, যার অবস্থান ছিল ষষ্ঠ শতকে পূর্ব বাংলার উত্তর অংশে। সপ্তম শতকে গৌড়ের রাজধানী ছিল 'কর্ণসুবর্ণ'। বাংলায় মুসলিম বিজয়ের কিছু আগে মালদহ জেলার 'লক্ষণাবর্তীকে' গৌড় বলা হত। মুসলিম যুগেও এ অঞ্চল গৌড় নামে পরিচিত ছিল। আর 'বঙ্গ' ছিল বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে 'বঙ্গ' নামে একটি জাতি বাস করত। তাই জনপদটি পরিচিত হয় 'বঙ্গ' নামে।