ফ্ল্যাপে লিখা কথা রাজনীতিবিদদের কারাজীবন কোনো নতুন ঘটনা নয়। তাঁদের কেউ কেউ কারাগারের দিনগুলোতে কবিতা, দিনপঞ্জি ও বই লিখেছেন। কারাগার থেকে পাঠানো চিঠিও সাহিত্য মর্যাদা লাভ করেছে। এ বইতে লেখক মওদুদ আহমদ তাঁর সর্বশেষ কারাগারের দিনযাপন ও পূর্বে ঘটে যাওয় রিমান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন । লিখতে বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। বইটিতে তিনি তাঁর সুখ, দুঃখ, বেদনার সঙ্গে পাঠককে একাত্ম করার চেষ্টা করেছেন। দেশ, সমাজ, রাজনীতি নিয়ে তুলে ধরেছেন নানান ভাবনা। এ বই থেকে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের একজন রাজনীতিবিদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, দুঃখ-বেদনা-সর্বোপরি পথচলা সম্পর্কে একটি ছবি পাওয়া যাবে। মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার , সাংসদ, সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। এর আগে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে তিনি নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন দীর্ঘদিন থেকে। সেই সঙ্গে একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিক হিসেবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে নিয়মিত লেখালেখি করে এসেছেন। জনাব আহমদ জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৬,১৯৮০,১৯৯৬,২০০৯ ও ২০১০), অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩) ও হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮১,১৯৯৮,২০১১ ও ২০১২) সমূহের ফেলো। তিনি দি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৯৭) ইলিয়ট স্কুলের একজন ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও অধ্যাপনার কাজ করেছেন। ইউপিএল থেকে ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১২টি।
সূচিপত্র * মুখবন্ধ * প্রথম অধ্যায় : রিমান্ড * দ্বিতীয় অধ্যায় : কারাগারের দিনগুলি : সুশাসনের অবসান * তৃতীয় অধ্যায় : পশ্চাদোপসরণ : পলায়নের পথে * চতুর্থ অধ্যায় : উপসংহার
Moudud Ahmed ১৯৪০ সালের মে মাসের ২৪ তারিখ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগণঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স্ ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল' ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠক তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন। ১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১-এ মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমেদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রীত্ব ছাড়াও মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানকে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। এই দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সংগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।